৫০ মণের ভাগ্যরাজের দাম ২২ লাখ টাকা

সারাদেশ ডেস্ক

ছবি: সংগৃহিত

মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের কৃষক খান্নু মিয়া অনেক আগে থেকেই গরু লালন-পালন করেন। প্রথমে দুধেল গাভি পালন করলেও গত তিন বছর ধরে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে একটি করে গরু পালন করছেন। জেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ওই কোরবানির গরুর নাম ‘ভাগ্যরাজ’।

প্রায় ৫০ মণ ওজনের গরুটির দাম চাওয়া হচ্ছে হচ্ছে ২২ লাখ টাকা। গত বছর খান্নু মিয়ার ৫২ মণ ওজনের গরু ‘রাজাবাবু’ ছিল দেশসেরা কোরবানির পশু।

গত বছর ৫২ মণ ওজনের রাজাবাবু পালন করে তিনি সারাদেশে হৈ চৈ ফেলে দেন। গরুটি সাড়ে ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। এবারও বিশালাকৃতির কোরবানির গরু পালন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের কৃষক খান্নু মিয়া।

খান্নু মিয়ার মেয়ে ইতি আক্তার জানান, গরু লালন-পালনের সঙ্গেই তাদের ভাগ্য জড়িয়ে আছে। এজন্যই এবার কোরবানির গরুটির নাম ‘ভাগ্যরাজ’ রাখা হয়েছে।এবারও খান্নু মিয়ার খামারে পরম যত্নে লালন-পালন হচ্ছে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাড় গরু ভাগ্যরাজ। ১০ মাস আগে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকায় স্থানীয় একটি খামার থেকে গরুটি কিনে আনেন তিনি। এরপর থেকেই দেশীয় পদ্ধতিতে গরুটি মোটাতাজা করতে খান্নু মিয়ার স্ত্রী-কন্যারা দিন-রাত পরিশ্রম করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খান্নু মিয়া ও তার স্ত্রী পরিষ্কার বেগম ভাগ্যরাজকে গোসল করাচ্ছেন। এরপর তার মেয়ে একটি কাপড় দিয়ে গরুটির শরীর মুছিয়ে দেন। ছোট মেয়ে ইতি আক্তার কলার ঝাকা নিয়ে এসে ভাগ্যরাজের মুখে তুলে কলা খাওয়ান। গরুটির সামনে পেছনে ও ওপরে বৈদ্যুতিক পাখা লাগানো। কিছুক্ষণ পর বিদ্যুৎ চলে গেলে ইতি আর খান্নু মিয়া হাত পাখা দিয়ে বাতাস করতে থাকেন ভাগ্যরাজকে।তিনি জানান, ভাগ্যরাজ সাড়ে ৮ ফুট লম্বা। উচ্চতা ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি। বুকের বেড় ১১৭ ইঞ্চি। বর্তমান ওজন প্রায় ৫০ মণ। ঈদের বাকি কয়েক দিনে গরুটির ওজন আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খান্নু মিয়ার স্ত্রী পরিষ্কার বেগম জানান, তার কোনো ছেলে সন্তান নেই।৬ মেয়ে। তাই নিজের সন্তানের মতোই ভাগ্যরাজকে লালন-পালন করা হয়। নিজেরা যা খেতে পান না তাই খাওয়ান পশুটিকে। কেবল ভালো দাম পেলেই তাদের সবার পরিশ্রম স্বার্থক হবে।

আরও পড়ুন >> ডেঙ্গুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, কৃষক খান্নু মিয়া প্রতিবছর দেশীয় এবং আধুনিক পদ্ধতিতে একটি করে গরু মোটাতাজা করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। এবারও তার খামারে বিশালাকৃতির গরু ভাগ্যরাজ রয়েছে, যা দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করেন। আশা করা হচ্ছে, এবারও গরুটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন তিনি।


তিনি বলেন, খান্নু মিয়া গরু পালনে প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে পরামর্শ নিয়ে থাকেন। প্রাণী সম্পদ বিভাগও তাকে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছে।

খান্নু মিয়ার মেয়ে ইতি আক্তার জানান, গত বছর রাজাবাবুকে কোরবানির হাটে নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল তাদের। তাই এবার উপযুক্ত দাম পেলে বাড়ি থেকেই ভাগ্যরাজকে বিক্রি করতে চান। ক্রেতা চাইলে কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত গরুটি লালন-পালন করে দিতেও আগ্রহী তারা।ভাগ্যরাজের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা। ভাগ্যরাজকে কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা ০১৭৩৩৬৮৮১৯৪ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে