ভাতিজিকে ধর্ষণের পর হত্যায় দায়ে চাচার মৃত্যুদণ্ড

আইন ও বিচার ডেস্ক

আদালত
ফাইল ছবি

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া আপন ভাতিজিকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে চাচা নূর মোহাম্মদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. মিজানুর রহমান এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড প্রদানের পাশাপাশি আসামিকে ১ লাখ টাকা জরিমানাও করেছেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত নূর মোহাম্মদ জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী তুলতলা গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ছেলে।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ মার্চ সকাল ৭টার দিকে উপজেলার নলী তুলাতলা গ্রামের বাসিন্দা মহারাজ হাওলাদারের স্ত্রী ফাতেমা বেগম তার দ্ইু মেয়ে আমেনা (১৪) ও তাছলিমা এবং ছেলে আল আমিনকে ঘরে রেখে ঘাষ খাওয়ানোর জন্য চারটি গরু নিয়ে মাঠে যান। ওই সময় নূর মোহাম্মদ বাড়িতে গিয়ে ভাতিজি আমেনাকে বাঁশ কাটার কথা বলে বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে সঙ্গে থাকা কুড়াল দিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসহ পিঠে, পেটে ও পায়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ খালে ফেলে দেয়।

ঘণ্টাখানেক পর  ফাতেমা বাড়িতে আমেনাকে দেখতে না পেয়ে সে কোথায় গেছে তা অন্য সন্তানদের জিজ্ঞেস করেন। জবাবে তারা জানায়, চাচা নূর মোহাম্মদ বাঁশ কাটার কথা বলে আমেনাকে বড় বাগানে নিয়ে গেছে। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে পাশ্ববর্তী খালে গোসল করতে থাকা ছেলেমেয়েরা  আমেনার লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে। তখন আমেনার মা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং প্রতিবেশী শহীদুলের স্ত্রী লুৎফা বেগমের সহায়তায় লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে নূর মোহাম্মদকে আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ অসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে পুলিশ মামলার চার্জশিট দাখিল করে। আদালত মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার নুর হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক খান বাদশা ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস মামলা পরিচালনা করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে