জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ

বিশেষ প্রতিবেদক

ইলিশ
ফাইল ছবি

উপকূলীয় বরগুনা জেলার বেতাগীর বিষখালি নদীতে জাল ফেললেই জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রূপালী ইলিশ।

ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞার টানা ৬৫ দিন পর এবার উপকূলীয় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে।

universel cardiac hospital

দীর্ঘ অলস সময় কাটানোর পর এখন তারা ইলিশ আহরণের কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত। বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেও মাছ শিকারে মরিয়া বিষখালির জেলেরা।

শুধু বিষখালি নয় বঙ্গোপসাগরে এবার বেশি পরিমাণ ইলিশ ধরা পরায় উপকূলীয় জেলা বরগুনার বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটার জেলে এবং মৎস্য ব্যবসায়ীদের দিন কাটছে ব্যস্ততায়।

অপরদিকে ইলিশ বেশি পাওয়ায় দামও কমে আসছে, এতে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মনে।

বেতাগী উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর সরকার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কারণ এ সময়ে গভীর সাগর থেকে নদীর মোহনায় এসে ডিম দেয় মা ইলিশ।

অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরের নিষেধাজ্ঞার পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন ছিল। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত টানা ৬৫ দিন ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এ নিয়ে হতাশা আর ক্ষোভে মুখ থুবড়ে পরেছিল বিষখালি নদী পাড়ের জেলেরা।

পুরো ৬৫ দিনই বেকার সময় পার করতে হয়েছে জেলেদের। জেলেদের দাবি ছিল ডিম দেয়ার সঠিক সময় নির্ধারণ করে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আগের মতো ২২ দিন করার।

উপজেলার চরখালী এলাকার জেলে ফোরকান মিয়া জানান, বর্তমানে নদীতে জাল ফেললেই মাছ ওঠে, সবাই মিলে নদী পেরিয়ে সাগরে গেলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়া যায়। নদী ও সাগরের মোহনায় গেলে একেকটি বড় জেলে ট্রলারে প্রতিদিন ১০০-২০০ ইলিশ ধরা পড়ে; যা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়।

তিনি আরও বলেন, সাগরে এভাবে ইলিশ ধরা পড়লে খুব অল্প দিনেই দাদনের ঋণ শোধ করা যাবে। সব জেলের সংসারের অভাব দূর হবে। তবে আবার হঠাৎ করে যদি ইলিশের পরিমাণ কমে যায় তাহলে জেলেদের দুঃখ-দুর্দশার শেষ থাকবে না। কারণ এ সব এলাকার জেলেদের বিকল্প কোনো আয়ের সুযোগ নেই।

বেতাগী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আল রাজিব গণমাধ্যমকে বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন সময়ে বেতাগীর জেলেরা ইলিশ শিকার থেকে বিরত থেকেছেন। এ জন্য বেতাগী উপজেলা মৎস্য দফতর ইলিশ রক্ষায় মডেল হিসেবে’প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে জাতীয়ভাবে পুরস্কারও পেয়েছেন। আর যথাসময়ে ইলিশ রক্ষার কারণেই বর্তমানে নদী ও সাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ ধরা পড়ছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে যেভাবে ইলিশের দেখা মিলছে এভাবে কয়েক দিন মাছ ধরা পড়লে তাতে জেলেদের দুর্দশা থাকার কথা নয়। আমরা মনে করি, এভাবে সামনের কয়েক মাস প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে