ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে গুচ্ছ বোমা মারছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে নিলাম উপত্যকায় নারী-শিশুসহ নিষ্পাপ লোকজনকে নিশানা করে কামানের মাধ্যমে গুচ্ছ গোলা নিক্ষেপ করেছে তারা।
এতে চার বছর বয়সী একটি শিশুসহ দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম স্পুটনিক ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডেইলি টাইমস।
দুই দেশের মধ্যে উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লাহ জেলায় ভারী গোলা বিনিময়ের একদিন পর পাকিস্তানের তরফ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে গুচ্ছ বোমা নিক্ষেপ জেনেভা কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা জানায়, বেসামরিক লোকদের ওপর মারাত্মক প্রভাবের দরুন গুচ্ছ গোলার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সব আন্তর্জাতিক নীতিমালার বাইরে গিয়ে এই ভয়ানক ভারতীয় আগ্রাসনে দেশটির সেনাবাহিনীর আসল চরিত্র ও নৈতিক মানদণ্ড প্রকাশ পেয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর ২৮ হাজার সদস্যকে শুক্রবার জম্মু ও কাশ্মীরে পাঠানো হয়েছে। আর গত সপ্তাহে সেখানে ১০ হাজার ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।
নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের প্রতিবাদ জানাতে গত বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল পাকিস্তান। পরবর্তী সময়ে কাশ্মীর সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান তার আকাশপথ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমে বাড়ছে।
১৪ ফেব্রুয়ারিতে কাশ্মীরের স্থানীয় এক যুবকের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ৪০ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ ওই হামলার দায় স্বীকার করে।
এদিকে আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের সরকার লোকজনকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যারা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বসবাস করেন, তারা যেনো কোনো অপরিচিত ডিভাইস কিংবা গ্যাজেট কুড়িয়ে না নেয় কিংবা স্পর্শ না করে।
অক্ষত গোলা ও ছোট ছোট বোমা নিয়ে খেলতে গিয়ে এর আগে বহু শিশু হতাহতের শিকার হয়েছে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শত্রু বাহিনী অবিরত খেলনা-আকৃতির গুচ্ছ বোমা ও মাঝারি কামানের গোলা নিক্ষেপ করছে। যদি কেউ মোবাইল ফোনসহ এরকম কোনো ডিভাইস পড়ে থাকতে দেখে, তবে সেটি যেন স্পর্শ না করে কিংবা তুলে বাড়িতে নিয়ে না যায়।