মিয়ানমার থেকে ট্রলারবোঝাই গরু-মহিষ আসছে

বিশেষ প্রতিনিধি

মিয়ানমার থেকে আসা ট্রলারবোঝাই গরু-মহিষ
ফাইল ছবি

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো মিয়ানমার থেকে ট্রলারবোঝাই গরু-মহিষ বাংলাদেশে আসছে। শুক্র ও শনিবার শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে ২ হাজার ২২৮টি গবাদি পশু ঢুকেছে।

এসব পশু শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় তোলার পর পাইকারি দামে কিনে নিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন বেপারীরা। এতে প্রচুর রাজস্ব আদায় হচ্ছে। দেখতে দেশীয় গরুর মতো হওয়ায় কোরবানির পশুর হাটে দেশীয় গরুর চড়া দামের লাগাম টানতে সহযোগিতা করছে মিয়ানমার থেকে আমদানি হওয়া গবাদি পশু।

universel cardiac hospital

শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের শেষ সময়ে বৈরী আবহাওয়া ও মিয়ানমারের সমস্যার কারণে বেশ কিছুদিন পশু আমদানি বন্ধ ছিল। কিন্তু আগস্ট মাসের শুরুতেই সমুদ্রপথে ট্রলারবোঝাই কোরবানির পশু আসছে। গত দুইদিনে ২ হাজার ২১২ গরু, ৬১৬টি মহিষ এসেছে মিয়ানমার থেকে। দুইদিনে ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জুলাইয়ে ১০ হাজার ৯৫টি গরু-মহিষ আসে করিডোর দিয়ে। গত অর্থবছরের জুলাইয়ে মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আসে প্রায় ৫ হাজার। অর্থাৎ গত বছর জুলাইয়ের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে দ্বিগুণ গরু-মহিষ আমদানি হয়েছে।

পশু আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম বলেন, শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে সারা বছর মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি হয়ে থাকে। এখানকার গবাদি পশু স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম-নোয়াখালী-কুমিল্লাসহ সারাদেশে সরবরাহ হয়। কিন্তু করিডোর দিয়ে পশু আমদানি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হলেও কোনো ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

পশু আমদানি কারক মোহাম্মদ সোহেল আজ শনিবার দুটি ট্রলারে প্রায় আড়াইশ গরু-মহিষ এসেছে বলে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশের চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানির পশু আমদানি করছি। ঈদ আসতে আরও কয়েকদিন সময় রয়েছে। এর ভেতরে আরও কয়েক হাজার পশু আমদানি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

টেকনাফ শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা গরু-মহিষ থেকে ৫০০ ও ছাগল থেকে ২৫০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়। ঈদকে সামনে রেখে আমদানিকারকদের আরও বেশি মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

কক্সবাজারের ব্যবসায়ী আজিজ মওলা চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের গরু সাইজে ও দেখতে অনেকটা দেশি গরুর মতো। কিন্তু দেশি গরুর চেয়ে এর দাম একটু কমই। ফলে কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের গরুর চাহিদা বিশেষ।

টেকনাফ বিজিবির-২ অধিনায়ক লে. কর্নেল ফয়সল হাসান খান গণমাধ্যমকে বলেন, সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে পশুবোঝাই ট্রলারে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে সতর্ক নজর রয়েছে বিজিবির। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে পশু আমদানি নির্বিগ্ন করতে বিজিবি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, কোরবানির পশুর হাটে চাঁদাবাজি, জাল টাকার ব্যবহারসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে পুলিশ নজরদারি রাখছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে