বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা পতাকা অবমাননা ও ভুয়া জন্মদিন পালনের পৃথক দুই মামলায় চার্জ শুনানির জন্য আগামী ১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছে আদালত।
সোমবার এ দুই মামলায় চার্জ শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর আসামিপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী চার্জ শুনানির জন্য ১ সেপ্টেম্বর তারিখ ঠিক করেন।
কেরানীগঞ্জের কারা ভবনের পাশের নতুন বিল্ডিংয়ের ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে এ শুনানি হয়।
আদালত সূত্র জানায়, এ দুই মামলায় গত বছরের ৩১ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান খালেদা জিয়া। এর আগে গত বছরের ৫ জুলাই রাজধানীর বকশীবাজার অস্থায়ী আদালতে পৃথক দুই মহানগর হাকিম ওই দুই মামলায় জামিন নাকচের আদেশ দিয়েছিলেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী বাদী হয়ে পতাকা অবমাননা মামলাটি করেন।
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে এ মামলাটি করা হয়। আদালত বাদীর অভিযোগের শুনানি নিয়ে মামলটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্ত শেষে রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এর পর ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নূর নবী ২২ মার্চ ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে খালেদা জিয়াকে হাজির হতে সমন জারির আদেশ দেন।
ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে বলেন। তা না হলে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দেন।
এর পর বেশ কয়েকটি ধার্য তারিখে উপস্থিত না হলে ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
অন্যদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভুয়া জন্মদিন পালনের মামলাটি করেন। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে ১৯ ও ২২ আগস্ট দুই জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট।
তার বিবাহের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী, তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি।
এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকীর জাতীয় শোক দিবসে আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন। শুধু বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য তিনি ওই দিন জন্মদিন পালন করেন।