জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেছেন, ‘কাশ্মীরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ভারত।’ জম্মু-কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা তুলে নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সোমবার তিনি এ কথা বলেন।
মেহবুবা মুফতি বর্তমানে শ্রীনগরে গৃহবন্দী রয়েছেন। সেখানে বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘ভারতের সংবিধানে যাঁদের বিশ্বাস ছিল, তাঁরা ভুল প্রমাণিত হয়েছেন। ভারতের গণতন্ত্রে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।’
রাষ্ট্রপতির নির্দেশ জারির মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদির সরকার বাতিল করে দিয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা। এই ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে দুই টুকরো করে দেওয়ার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। ওদিকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা। এখন থেকে এর পরিচিতি হবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে।
এই সিদ্ধান্তের জের ধরে মেহবুবা মুফতিসহ কাশ্মীরের স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দী করা হয়েছে।
মেহবুবা মুফতি বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা যে জাতির পক্ষে ছিলাম, তারাই আমাদের হতাশ করেছে।’ ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় পাকিস্তানের পাশে না থেকে ভারতকে সমর্থন করার বিষয়টিকে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ বলেও অভিহিত করেন জম্মু-কাশ্মীরের এই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের যে সাংবিধানিক সম্পর্কটি আছে, তা এখন অবৈধ দখলদারিতে রূপ নেবে। সুতরাং এখন আমাদের ওই প্রেক্ষাপটেই লড়াই করে যেতে হবে।’
এর আগে এক টুইট বার্তায় মেহবুবা মুফতি দাবি করেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সমগ্র উপমহাদেশে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত দুই সপ্তাহে এই উপত্যকা অঞ্চলে হাজার হাজার ভারতীয় সেনা প্রবেশ করেছেন। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা। জায়গায় জায়গায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ।