ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর আর জম্মু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এতে রোববার রাত থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
একই সঙ্গে সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গোটা কাশ্মীরে মোবাইল টেলিফোন আর ইন্টারনেট সেবা আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
এদিকে সোমবার সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসেছে। এতে কাশ্মীর নিয়েই মূলত আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্রীনগরে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারবেন না।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জম্মু জেলাতেও সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১৪৪ ধারায় জারি হয়েছে।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ টুইট করে জানিয়েছেন, তাকে সম্ভবত গৃহবন্দি করা হতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, অন্য মূলধারার রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রেও সম্ভবত একই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, শুধু ওমর আবদুল্লাহই নন, আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং সাজ্জাদ লোনকেও গৃহবন্দি করা হচ্ছে।
মেহবুবা মুফতি টুইট করে জানিয়েছেন, এ কঠিন পরিস্থিতিতে আমি আশ্বাস দিতে চাই। যাই হোক, আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমাদের যেটি অধিকার, সেটি পাওয়ার লড়াই থেকে কোনো কিছুই আমাদের সরিয়ে আনতে পারবে না!
মূলধারার সব রাজনৈতিক দলই সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোনো পরিস্থিতিতেই যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন জনগণ।
রোববার রাত দেড়টা নাগাদ ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতি আর সাজ্জাদ লোনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, এক অভূতপূর্ব নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শ্রীনগর শহরকে। শহর ছাড়া গ্রামীণ এলাকাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় পুলিশ চৌকি বসানো হয়েছে।
ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের সাংবিধানিক রক্ষাকবচ দেয় যেই ৩৫এ আর ৩৭০ ধারা, সে দুটি সরিয়ে নেয়া হতে পারে।
এ নিয়ে আশঙ্কা আর গুজব ছড়ানোর পরেই রাজ্যের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো প্রথমে রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করে। তার পর ওই দলগুলো রোববার একটি সর্বদলীয় বৈঠকেও মিলিত হয়েছিল।
গত কয়েক দিন ধরেই ভারতশাসিত কাশ্মীরে বাড়তি ২৮ হাজার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী পাঠানোর সিদ্ধান্ত, হিন্দুদের পবিত্র অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে ওই রাজ্য থেকে সব তীর্থযাত্রী আর পর্যটকদের রাজ্য ছেড়ে দ্রুত চলে যাওয়ার পরামর্শ- এসব ঘটনার পর থেকে সেখানে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে।