ঈদের পর ছাত্রদলের কাউন্সিল

ডেস্ক রিপোর্ট

ছাত্রদল
ফাইল ছবি

আসন্ন ঈদুল আজহার পর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের পর যে কোনো দিন নির্ধারণ করা হবে কাউন্সিলের সময়।

৫ আগস্ট (সোমবার) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

universel cardiac hospital

সূত্র জানায়, গত ১৫ জুলাই এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে দেখা দেয় সংকট। সোমবারের বৈঠকে এ সংকটের সমাধান হয়েছে। লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান।

বৈঠক সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহে প্রত্যাহার করা হবে ১২ ছাত্রদল নেতার বহিষ্কার আদেশ। ক্ষুব্ধ নেতাদের যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে। পাশাপাশি ছাত্রদলের কাউন্সিল ঘিরে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা, বাছাই ও আপিল কমিটিতে ক্ষুব্ধ নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ বৈঠক হয়। এ বৈঠকে তারেক রহমানের যে কোনো সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গিকার করেন বিলুপ্ত কমিটির ছাত্রনেতারা।

ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে। মূলত ক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে তারাই দফায় দফায় কথা বলে সংকট সমাধানের কাজ করেন।

তাদের নেপথ্যে থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নিপুণ রায় চৌধুরী ও আব্দুল মতিন। বিদ্রোহীদের মধ্যে ছিলেন ইখতিয়ার রহমান কবির ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি।

এ বিষয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সন্তান ভুল করলে তাৎক্ষণিক শাসনও করে বাবা আবার পরক্ষণেই ক্ষমাও করে বাবা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে ছাত্রদলের সমস্যা সমাধান হয়েছে।

ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, আমাদের আর কোনো ক্ষোভ নেই। রাজনৈতিকভাবে ভাইয়া (তারেক রহমান) আমাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি ছাত্রদলের কাউন্সিলে সহযোগিতা করতে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে সহযোগিতা করবো। তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো যা তাকে কথা দিয়েছি।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ ক্ষুব্ধ নেতাদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরউদ্দিন তুহিন, জয়দেব জয়, বায়েজিদ আরেফিন, দবির উদ্দিন তুষার, আজিজ পাটোয়ারিসহ আরও ৪০ জনের মতো ছাত্রনেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র আরও জানায়, ছাত্রদলের সাবেক নেতারা তাদের দাবি-দাওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। বিগত দিনে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রণকারী কথিত সিন্ডিকেট নিয়ে নিজেদের তিক্ততার কথাও জানান তারা। প্রায় ২০ জনের মতো নেতা তাদের বক্তব্যে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি জানান।

তারা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদলের কাউন্সিল পর্যন্ত এ কমিটি চান। তাদের নেতৃত্বে কাউন্সিল শেষে এ সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেয়ার কথাও বলেন ক্ষুব্ধ নেতারা। এ সময় তারেক রহমান ক্ষুব্ধ সব নেতার কথা শোনেন।

সবশেষে ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য দ্রুত কাউন্সিল করতে চাই। এ জন্য সহযোগিতা প্রয়োজন। জবাবে ছাত্রনেতারা কাউন্সিল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা দেন। পরে ক্ষুব্ধ নেতাদের দাবির বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন তারেক রহমান। তবে যে সিদ্ধান্তই তিনি দিবেন তা মেনে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এ সময় সব ছাত্রনেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার অঙ্গিকার করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে