পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারে ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে তিনি এ বিষয়টি তুলে ধরে কাশ্মীরের অধিকারের পক্ষে লড়বেন বলে জানিয়েছেন।
ইমরান খান বলেন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করেছে ভারতের ওই পদক্ষেপ। তার আশঙ্কা, ভারত সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাতে পারে।
ভারতের সংবিধানে যে অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, সেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের একদিন পরও পুরো কাশ্মীর বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। কাশ্মীর নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই। তবে প্রতিটি দেশ তার একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
ভারতের অংশে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা চলছে। ফলে গত কয়েক দশকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করছে ভারত; যা বরাবরই নাকচ করে দিয়ে আসছে পাকিস্তান। তবে তারা বলছে, শুধু স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরের লোকজনকে নৈতিক আর কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে ইসলামাবাদ।
কী বলেছেন ইমরান খান?
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি সারা বিশ্বকে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানাতে চান।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে, যা নিয়ে আমরা এখন পর্যালোচনা করছি, বিষয়টি আমরা সাধারণ পরিষদে তুলবো। প্রতিটি সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আমরা কথা বলব, গণমাধ্যমের কাছে আমরা তুলে ধরব এবং সারা পৃথিবীর মানুষকে জানাবো, তিনি বলেছেন।
ইমরান খান বলছেন, তার মনে হচ্ছে কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার ফলে ভারত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ওই এলাকায় জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তন করতে পারবে। একই সঙ্গে কাশ্মীরে ভারতের জাতিগত নিধনের আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছেন ইমরান খান।
তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা, (ভারত) এখন কাশ্মীরে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাবে। তারা স্থানীয় মানুষজনকে সরিয়ে দেবে এবং অন্যদের সেখানে নিয়ে আসবে এবং তাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ করে তুলবে। ফলে স্থানীয় মানুষ তাদের দাস হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।
এর আগে পাকিস্তানের ক্ষমতাশালী সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন, তার সৈন্যরা কাশ্মীরের মানুষের সংগ্রামে পাশেই থাকবে। ভারতের ওই পদক্ষেপকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে বর্ণনা করেছে প্রতিবেশী চীন।
কী ঘটছে কাশ্মীরে?
ভারতশাসিত কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের দুদিন পরও কাশ্মীর কার্যত বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। রোববার সন্ধ্যা থেকেই রাজ্যের টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছিল স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়ার ফলে সেখানে বড় ধরনের বিক্ষোভ হতে পারে।
কিন্তু এর মধ্যেই বিবিসি হিন্দির একজন সাংবাদিক আমীর পীরজাদা ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ভেতর থেকে জানাতে পেরেছেন; সেখানে কী ঘটছে। টেলিফোনে তিনি বলছেন, কাশ্মীর এখন ক্রোধে ফুঁসছে।
তার মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটছে এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের আটকে রাখা হয়েছে বলে জানান শ্রীনগর থেকে বিবিসির সাংবাদিক। ভারতের অন্যান্য প্রান্তে থাকা কাশ্মীরিরা নিজেদের পরিবারের সাথেও যোগাযোগ রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
- কোরবানির বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ
- চাকরির খোঁজে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ ডমিঙ্গো ঢাকায়
সোমবার ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি ঘোষণার আগে থেকে সেখানে হাজার হাজার অতিরিক্ত সেনা সদস্য পাঠিয়েছে ভারত। রাস্তায় সর্বত্র হাজার হাজার সেনা, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী টহল দিচ্ছে। সব রাস্তা বন্ধ। সবখানে জারি হয়েছে কারফিউ।