‘জঙ্গি দমন ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে আনাই আমার বড় সফলতা’

মহানগর প্রতিবেদক

ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া (ফাইল ছবি)

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, গত সাড়ে চার বছর দায়িত্ব পালনের সময় জঙ্গি দমন ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারাই আমার সবচেয়ে বড় সফলতা।

দীর্ঘ চার বছর সাত মাস ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এ পদে আজ তার শেষ কর্মদিবস। নিজের কর্মজীবনের সফলতা ও ব্যর্থতার বিষয়ে তিনি মনে করেন সফলতার পাল্লাই ভারী।

universel cardiac hospital

৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শেষ কর্মদিবসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। এছাড়া, নগরীকে অপরাধমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচির বাস্তবায়ন আমার আরও একটি সফলতা।’

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘২০১৫ সালে ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহনের পর টানা ৯২দিন আগুন সন্ত্রাস হয়েছিল। আমরা গণমাধ্যম কর্মী ও নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সেই আগুন সন্ত্রাসকে দমন করেছি। এছাড়া ২০১৬ সালের ১জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলায় দেশি-বিদেশি ২২জন নাগরিক নিহত হন। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা অন্যান্য পুলিশ অফিসারদের নিয়ে হলি আর্টিসানে গিয়ে হাজির হই। আমার পাশেই সন্ত্রাসীদের ছোড়া একটি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে আমি বেঁচে গেলেও প্রাণ হারায় আমরা প্রিয় দুই সহকর্মী।’

তিনি বলেন, ‘এই সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে দেশজুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্য তৈরি হয়। হলি আর্টিসান হামলার পর আমরা ছোট বড় ৬০টি জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালিয়েছি। তাতে অনেক জঙ্গি নিহত হয়েছে এবং অনেককেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। ছয় মাসের মধ্যে আমরা এই জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দিয়েছি।’

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘খুব অল্প সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারী ও ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি বলে দেশে বিনিয়োগ চলমান রয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সবসময় জিরো টলারেন্স। আমরা ঢাকা মহানগরীতে মাদক বিরোধী অনেক অভিযান করেছি। মাদকের আখড়া বলে খ্যাত সকল স্থান ভেঙ্গে সামাজিক প্রতিষ্ঠান করে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘জনগণকে পুলিশিংয়ে সম্পৃক্ত করতে ডিএমপি’র ৫০টি থানাকে ৩০২টি বিটে ভাগ করে জনমত গড়ার কাজ করেছি। অপরাধীরা যাতে পরিচয় গোপন রেখে ঢাকা শহরে বসবাস না করতে পারে সেজন্য আমরা ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করেছি। বর্তমানে প্রায় ৭২ লাখ নাগরিকের তথ্য আমাদের সফটওয়ারে সংরক্ষিত আছে। নাগরিক তথ্য সংগ্রহের ফলে হলি আর্টিসানে সন্ত্রাসী হামলার পর ঢাকা শহরে কোন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের উদ্যোগে ঢাকা শহরের বাসা-বাড়ি,অফিস, দোকান, মার্কেট ও শপিংমলসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। যার ফলে অপরাধ হলেও অপরাধীকে সহজে ও দ্রুত সময়ে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ইভেন্টের জন্য নিরাপদ ভেন্যু হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা সফলতার সাথে আইপিইউ, সিপিইউ সম্মেলনের মত বড় ইভেন্টে নিরাপত্তা দিয়েছি।’

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে