কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস।
সিমলা চুক্তির কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, কোনো তৃতীয়পক্ষ ছাড়াই এই বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব। খবর এনডিটিভির।
সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে কাশ্মিরকে যে স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল সেটি বাতিলের ঘোষণা দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একইসঙ্গে কাশ্মীর থেকে ভেঙে লাদাখকে আলাদা করার ঘোষণাও দেন তিনি।
গত সপ্তাহ থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে অতিরিক্ত আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অমরনাথের তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের দ্রুত রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে। ওই ঘোষণার পরেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যে।
সোমবার রাতে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিল পাসের পর জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মহেবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। উপত্যকার বেশ কিছু এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
উপত্যকার সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। শহর ও গ্রামগুলোর আশপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেখা গেছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুরো অঞ্চলে টিভি চ্যানেল, ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
ভারতের এই পদক্ষেপকে অবৈধ উল্লেখ করে পাকিস্তান জানিয়েছে বিষয়টি তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করবে।
জাতিসংঘের মহাসচিব জানান, এমন কোনো পদক্ষেপ কারও নেওয়া ঠিক হবে না যেখানে কাশ্মির পরিস্থিতির অবনতি হয়।
মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, গুতেরেস জম্মু ও কাশ্মিরের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সর্বোচ্চ সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
দুজারিক নির্দিষ্ট করে বলেন, ১৯৭২ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শিমলা চুক্তি হয়েছিলো। সেখানে জাতিসংঘের আইন মেনে জম্মু ও কাশ্মিরের সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে কথা বলা হয়েছিলো।
জাতিসংঘ মহাসচিব কাশ্মির ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব না দিয়ে শিমলা চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের ব্যাপারে জাতিসংঘ তার চার্টার অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে বুধবার টুইটারে প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মুখপাত্র।
বর্তমান অচলাবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ওই বার্তায় বলা হয় তা কাশ্মিরের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে দেবে।
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, এর মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মিরের ভবিষ্যত মর্যাদার প্রশ্নে কোনো গণতান্ত্রিক বিতর্কে অংশ নেওয়া থেকে সেখানকার জনগণকে বিরত রাখা হবে।
তবে ভারত জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মির ভারতের অংশ, তাই এই ইস্যুটি সম্পূর্ণই তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।