জিআরপি থানায় গণধর্ষণের অভিযোগে ওসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে

বিশেষ প্রতিবেদক

ওসি উছমান গণি পাঠান
ওসি উছমান গণি পাঠান। ফাইল ছবি

খুলনা জিআরপি থানায় এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগে থানার তৎকালীন ওসি উছমান গণি পাঠানসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।

জানা যায়, মামলা দায়েরের জন্য খুলনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর বিচারক রেলওয়ের পাকশী জেলা পুলিশের এসপিকে চিঠি দিয়েছেন। এ ছাড়া ঈদের পর ভুক্তভোগীর পক্ষে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে তার পরিবার।

universel cardiac hospital

পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া চিঠিতে সাত দিনের মধ্যে মামলা করার নির্দেশনা রয়েছে। চিঠিতে ২০১৩ সালের হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেওয়া হয়

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, বৃহস্পতিবার আদালতের চিঠি পেয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে জিআরপি থানার ওসি উছমান গণি পাঠান, এসআই নাজমুল হকসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে ভুক্তভোগী নারীর পরিবার। ঈদের পর ওই নারীর খালাতো ভাই মো. শাহাবুদ্দিন মামলা করবেন বলে জানা গেছে।

ওই নারীর পক্ষে আইনি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা। সংস্থার খুলনা জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে যদি পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে, তাহলে তারা সেই মামলার কপি দেখবেন। সেখানে যদি পুলিশ শুধু হাজতে নির্যাতনের অভিযোগ আনে, তাহলে তারা আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করবেন। আর যদি পুলিশের মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ থাকে, তাহলে আর পৃথক মামলা দায়েরের প্রয়োজন হবে না।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আসা চার সদস্যের তদন্ত কমিটি এবং পাকশী রেলওয়ে পুলিশের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকালও খুলনায় অবস্থান করে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গত বুধবার ওসি উছমান ও এসআই নাজমুলকে পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশে প্রত্যাহার করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে এক নারীকে আটক করে খুলনা জিআরপি থানা পুলিশ। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ দিয়ে ওই নারীকে আটক করা হয়। রাতে থানার হাজতে ওসিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য তাকে মারধর ও ধর্ষণ করে। পরদিন তাকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত রোববার ওই নারী আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করেন। এ ছাড়া তাকে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।

আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং তার ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে সোমবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে