এবারের ঈদেও বিএনপিতে থাকছে না উৎসবের ছাপ। যদিও সারাদেশের নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য সংখক কারাগারে না থাকলেও একদিকে দলীয় প্রধান কারাবন্দি, অন্যদিকে ডেঙ্গু আর বন্যা পরিস্থিতি তাদের উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
দলটির পক্ষ থেকে এবারও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত দুই ঈদের মতো এই ঈদেও দলের নেতাকর্মীদের মনে আনন্দ নেই। আমাদের মনে বিষাদের ছায়া। কারণ আমাদের দলের সকল কার্যক্রম জিয়া পরিবারকে ঘিরে আবর্তিত। চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে। এই দুইজনের অনুপস্থিতিতে আমাদের মনে এমনিতেই ঈদের আনন্দ নেই। এরপর দেশে ডেঙ্গু মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে; সরকার তা প্রতিরোধে এখনও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। দেশের অনেক মানুষ বন্যাকবলিত। পাশাপাশি সরকারের জুলুম-নির্যাতন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ সরকারের উদাসীনতার কারণে মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। এই পরিস্থিতিতে এবারের ঈদে আসলে দেশের কোনো মানুষেরই আনন্দ নেই।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ করবেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াও বিদেশে চিকিৎসাধীন; তাদের ঈদ দেশের বাইরে কাটবে। স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান এবং মির্জা আব্বাস দেশে থাকলেও শারীরিকভাবে অসুস্থ; তারা ঈদে ঢাকায় থাকবেন। বেগম সেলিমা রহমানও এবারের ঈদে ঢাকায় থাকছেন। অন্যদিকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দলীয় কর্মসূচি পালন শেষে নিজেদের এলাকায় যাবেন।
বিএনপি থেকে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশাররফ ঢাকায় থাকবেন, তার দুই সন্তান ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত। সংরক্ষিত আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বরাবরই ঈদের সময় ঢাকাতেই থাকেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ইতোমধ্যেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড রাজনৈতিক মহলসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এবারের ঈদে দলের সিনিয়র নেতাদের অধিকাংশই ঢাকায় ঈদ করবেন। বেলা ১২টার দিকে দলের সিনিয়র নেতারা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন। পরে বনানীতে জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করবেন।
এছাড়া পরিবারের সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন। দলের নেতারা অনুমতি পেলে তারাও দেখা করবেন।
তিনি বলেন, এর আগে দলের পক্ষ থেকে যে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো এবার সে আয়োজন হচ্ছে না।
ঈদ উপলক্ষে দলের কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমি ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ করব। ঈদের দিন দলের নেতারা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করবেন।