শ্রীলংকায় সবশেষ গত ৩১ জুলাই শেষ ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ দল। আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজকে সামনে রেখে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে ক্যাম্প হবে। লংকা সিরিজ শেষে ক্যাম্পে যোগ দেয়ার আগ পর্যন্ত ২০ দিনের বিরতি পেয়েছে টাইগাররা।
তার পরও বাংলাদেশ দলের এক তারকা ক্রিকেটার বিশ্রাম নেয়ার জন্য ছুটি চেয়েছেন।
ক্রিকেটমহলে প্রশ্ন উঠেছিল, কে সেই তারকা ক্রিকেটার? যিনি লম্বা বিরতির পর আবার ছুটি চাচ্ছেন।
এবার জানা গেল তার নাম। তিনি আর কেউ নন, ড্যাশিং টাইগার ওপেনার তামিম ইকবালই সেই ক্রিকেটার।
এ খবরে তামিমের দীর্ঘদিন ফর্মহীন থাকা ও শ্রীলংকা সফরে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে ব্যর্থতার বিতর্কের সঙ্গে নতুন বিতর্ক যোগ হতেই পারে।
যদিও এক্ষেত্রে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের পরামর্শটি বির্তককে কিছুটা প্রশমিত করতে পারে।
কিছুদিন আগে দলের ফর্মহীন ক্রিকেটারদের বিশ্রাম নিয়ে ফের সতেজ হয়ে ফেরার পরামর্শ দিয়েছিলেন সাকিব।
এবার তামিম সে পথেই হাঁটলেন। আসন্ন আফগান সিরিজের স্কোয়াডে নিজেকে যুক্ত করতে চাইছেন না তিনি। বিসিবির কাছে ইতিমধ্যে ছুটির আবেদন করেছেন । সেখানে ‘মানসিক বিরতি’ শব্দটি উল্লেখ করে ছুটির দরখাস্ত করেছেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।
- আরও পড়ুন >> ‘মহাসড়কে ধীরগতি থাকলেও তীব্র যানজট নেই’
এ বিষয়ে বিসিবি পরিচালক ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান জানালেন, মূলত মানসিক শান্তির কারণে বিরতি চেয়েছেন তামিম।
তিনি বলেন, আমরা তামিমের চিঠি পেয়েছি। আপাতত কিছুদিন একটু বাইরে থাকতে চায় সে। ও বলেছে যে, গত কিছুদিনে অনেক ক্রিকেট খেলেছে। মানসিকভাবে একটু ক্লান্ত। এটি কাটিয়ে উঠতে চায়। আমরা এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। ঈদের ছুটির পর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, তামিমের এ আবেদনে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বিসিবি।
সে হিসেবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তানের সঙ্গে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখা যাবে না নিয়মিত এই ওপেনারকে।
উল্লেখ্য, গত ৩ মাস টানা খেলার মধ্যে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ, আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ করে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে উড়ে গিয়েছিল বিশ্বকাপ খেলতে। সেখান থেকে ফিরেই আবার শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা।
আর এসব সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই ব্যাট হাতে নেমেছেন তামিম ইকবাল। যদিও প্রায় প্রতিবারই সমর্থকদের হতাশ করেছেন।
আয়ারল্যান্ডের মাটিতে দুটি অর্ধশতক ছাড়া আর বাকি সব ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তামিম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তামিমের মোট সংগ্রহ ছিল মাত্র ১০ রান।
বিশ্বকাপের মঞ্চে ৮ ম্যাচে তার রান সংখ্যা ২৩৫, যার গড় ২৯.৩৮। ওপেনার হিসেবে বড় কোন সংগ্রহ বা বড় জুটি তৈরি করতে পারেননি তিনি। যে কারণে বিশ্বকাপে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগেছে বাংলাদেশ।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় ফিল্ডিংয়েও ভুল করতে দেখা গেছে তামিমকে। হয়তো বাঁহাতি এ ওপেনারের এমন ধারাবাহিক ব্যর্থতাকে আমলে নিয়েই তাকে আপাতত বিশ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্তে মত দিয়েছেন বিসিবির কর্মকর্তারা।
এর আগে তামিমের বিশ্রামের বিষয়ে কিছুটা ইতিবাচক ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
তিনি বলেছিলেন, আমাদের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তারা। ওরা যদি কিছুদিন বিরতি নিয়ে ফিরতে চায় সেটাও ভালো। তাছাড়া ৩১ জুলাই শ্রীলংকার কলম্বোয় শেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে এসেছে ওরা। লম্বা একটা বিরতি দিয়ে প্রায় ৩ সপ্তাহ পরে কিন্তু ক্যাম্প শুরু হচ্ছে। তারা মানসিকভাবেও সতেজ হয়ে আসার বেশ সময় পেয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আগামী নভেম্বরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হিসেবে দুটি টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে ভারত সফরে যাচ্ছে টাইগাররা। বিশ্রাম শেষে সেই সফরেই তামিম ফিরবেন বলে জানা গেছে।