প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্ব পরিমণ্ডলে মর্যাদার আসন ধরে রেখে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে। এটা সম্ভব হয়েছে দেশের জনগণের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ যে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে তা ধরে রাখতে চায়।
প্রধানমস্ত্রী বলেন, ‘আজ দেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা সেটা অব্যাহত থাকবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে। মানুষ উন্নত, সুন্দর জীবন পাক। এ লক্ষ্যে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
তার সরকার শত প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মাথা উচু করেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।’
শেখ হাসিনা আজ সকালে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবন্দ, পদস্থ কর্মকর্তা, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যেন বাংলাদেশকে খাটো করে দেখতে না পারে, এদেশের মানুষ সর্বত্র মর্যাদা পায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য।’ তিনি এ সময় তার এবং আওয়ামী লীগের ওপর আস্থা রেখে দেশের জনগণ ভোট দিয়ে আরেকবার দেশ সেবার সুযোগ দেয়ায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভোট দিয়ে আমাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করার মর্যাদা আমি রক্ষা করব। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই আমার লক্ষ্য।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবকিছু উৎসর্গ করে এদেশের জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতা এদেশের মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারলে আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।’
বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী দেশবাসী ও প্রবাসী বাঙালি যারা আছেন সবাইকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানান। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমগ্র মুসলিম উম্মাহকেও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ১৫ আগস্টের শহীদসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত ঈদ আমাদের যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করার প্রেরণা দেয়।’ এ সময় যারা হজ করতে গেছেন তাদেরও ঈদের শুভেচ্ছা জানান তিনি।
সেই সঙ্গে সবার দোয়াও কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি নিজের চোখের ছানি অপারেশনসহ নানা প্রসঙ্গ টেনে সবার দোয়া চান তিনি। পবিত্র ঈদুল আজহার এই দিনে গণভবনের সবুজচত্বর বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়। বিভিন্ন বয়সের এবং শ্রেণি-পেশার লোকজন দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষমাণ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষাবিদ, সিনিয়র সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সর্বোপরি সাধারণ জনতার ভিড়ে এ সময় গণভবন চত্বর মুখরিত হয়ে ওঠে।
অন্যান্য বছরের মতো বছরের এই বিশেষ দিনটিতে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে অনেকেই এ সময় নিজস্ব অভাব-অভিযোগ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রী ধৈর্য ধরে অভাব-অভিযোগ শোনেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব এবং সচিব মর্যাদার অন্যান্য বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মুহম্মদ ফারুক খান এবং অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, দলের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।