১৪ আগস্ট ধানমন্ডিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দেশীয় শিল্প রক্ষায় কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) । এর আগে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিএর সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা জেনেছি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দিতে যাচ্ছে। এতে শতভাগ দেশীয় এ শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। সাভারের আধুনিক চামড়া শিল্পনগরী প্রয়োজনীয় কাঁচা চামড়ার অভাবে সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়বে। ফলে চামড়া শিল্পনগরীতে ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘ট্যানারি শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। এতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে।’ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান ট্যানারি মালিকদের এ নেতা।
বিটিএর সভাপতি বলেন, ‘কোরবানির সময় মাঠ পর্যায় থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে আড়তদার ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তাদের কাছ থেকে লবণযুক্ত চামড়া আমরা কিনে থাকি। এবার আগামী ২০ আগস্ট থেকে আমরা লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া সরকার নির্ধারিত মূলে সংগ্রহ শুরু করব।’
আড়তদাররা অভিযোগ করেছেন, ট্যানারি মালিকরা তাদের সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ কারণে টাকার অভাবে চামড়া কিনতে পারেননি তারা।
এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে বিটিএর নেতারা বলেন, বকেয়া টাকা আদায় হয়নি এমন দোহাই দিয়ে কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য কমিয়ে ফায়দা লুটেছেন আড়তদাররা। তারা পানির দামে চামড়া কিনেছে কিন্তু আমাদের কাছে যখন বিক্রি করবে তখন সরকার নির্ধারিত দামই নেবে। এ সময় চামড়ার দাম না পাওয়া ও বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আড়তদারদের ওপর দায় চাপান ট্যানারি মালিকরা।
বিটিএর সভাপতি আরও বলেন, ‘কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দেয়া হলে লাভবান হবে আড়তদার ও মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। এ কারণ তারা কম মূল্যে চামড়া কিনেছে। তাই কাঁচা চামড়া রফতানির এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত।’
সিনথেটিক ও ফেব্রিক্স দিয়ে পাদুকা মানিব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করায় বিশ্ববাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমে এক-তৃতীয়াংশে দাঁড়িয়েছে। দেড় ডলারের কাঁচা চামড়া এখন দশমিক ৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডসহ অনেক দেশের ছাগল ও ভেড়ার চামড়া কীভাবে মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্যানারি মালিকরা অব্যাহতভাবে লোকসান গুনছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইলিয়াছুর রহমান বাবু, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ও ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম প্রমুখ।