ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরিদের সায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নেয়ার ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
চীন ও পাকিস্তানের অনুরোধে ১৬ আগস্ট (শুক্রবার) বৈঠকটি হচ্ছে বলে কূটনীতিকদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কাশ্মীর নিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে এবং চীন পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়ে আসছে। এ কারণে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
৫ অগাস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়। এ কারণে সায়ত্বশাসন হারায় কাশ্মীরিরা। সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত।
এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীরিরা। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। অবরোধও চলছে। এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুইজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর একটি চিঠি লিখেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। তিনি চিঠিতে ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।
চিঠিতে কুরেশি লিখেছেন, ‘পাকিস্তান কাশ্মীরে যুদ্ধের উস্কানি দেবে না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। ভারত যদি ফের শক্তি প্রয়োগ করার পথে যায়, আত্মরক্ষার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে পাকিস্তান জবাব দিতে বাধ্য হবে।’
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। কাশ্মীরের ভারতীয় অংশে বিধিনিষেধ আরোপের খবরে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন মহাসচিব।
১৯৪৮ সালে ও ১৯৫০-র দশকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট নেয়ার কথাও ছিল।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৯৪৯ সাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে।