মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবশেষে ফিরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার সরকার।
বৃহস্পতিবার দেশটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আগামী ২২ আগস্ট প্রাথমিকভাবে তিন হাজার ৫৪০ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার।
বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ২২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা থেকে মিয়ানমার তিন হাজার ৫৪০ জনকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বাছাই করেছে। এদের আগামী সপ্তাহে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিয়ান্ট থো জানিয়েছেন, আগামী ২২ আগস্ট বাছাই করা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছেন তারা।
বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ছোট পরিসরে নতুন করে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে কাউকে জোর করে ফেরত পাঠানো হবে না। বাংলাদেশ একটি নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসন ছাড়া আর কিছুই চায় না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়ে আছে। ২০১৭ সালে আসা রোহিঙ্গাসহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের উখিয়া-টেকনাফের ৩১টি ক্যাম্পে জড়ো করে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
এরপর কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় তাদের প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া চালানো হয়। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। গত বছরের শেষ সময়ে এবং চলতি বছরের শুরুতে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা দিলেও কথা রাখেনি মিয়ানমার।
মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মিয়ানমার সরকার ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, রোহিঙ্গারা এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত নয়।
মিয়ানমার সরকারের মতে, রোহিঙ্গারা হলো বাংলাদেশি, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মিয়ানমারে বসবাস করছে। যদিও ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা মিয়ামারে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে।