কলকাতা থেকে দেশে এলো মঈনুল ও তানিয়ার লাশ

ডেস্ক রিপোর্ট

নিহত তানিয়া ও মঈনুল
নিহত তানিয়া ও মঈনুল, ছবি: সংগৃহিত

চোখের ডাক্তার দেখাতে গিয়ে কলকাতা থেকে লাশ হয়ে ফিরল দুই বাংলাদেশি। শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার লাউডন স্ট্রিটের কাছে গাড়িচাপায় মৃত্যু হয় মঈনুল আলম ও তানিয়ার।

আজ (রোববার) বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে স্বজনদের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী-বিএসএফ।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের পরিদর্শক মাসুম বিল্লাহ জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দুই দেশের কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাশ দুটি হস্তান্তর করা হয়।

রোববার সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই বাংলাদেশির মরদেহ বেনাপোল চেকপোস্টে নিয়ে আসা হয়। পরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে অপেক্ষারত স্বজনদের কাছে তাদের কফিন বুঝিয়ে দেয়া হয়।

এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বজনরা। এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।

পরিদর্শক মাসুম বিল্লাহ জানান, মঈনুলের মরদেহ তার চাচাতো ভাই জিহাদ আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঈনুল ঝিনাইদহের বুটিয়াঘাটি গ্রামের কাজী খলিলুর রহমানের ছেলে।

আর তানিয়ার মরদেহ বুঝে নেন তার চাচাতো ভাই আবু ওবায়দা শাফিন। তানিয়ার বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকশা উপজেলার চান্দুর গ্রামে। তিনি মুন্সি আমিনুল ইসলামের মেয়ে।

নিহত কাজী মুহাম্মদ মঈনুল আলম (৩৬) ছিলেন গ্রামীণফোনের রিটেইল সাপোর্ট ম্যানেজার ও সিটি ব্যাংকের ধানমণ্ডি শাখার সিনিয়র অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন ফারহানা ইসলাম তানিয়ার (২৮)।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবারা রাত ২টার দিকে একটি জাগুয়ার তীব্র গতিতে শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। লাউডন স্ট্রিটের কাছে সেটি একটি মার্সিডিজকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ট্রাফিক পুলিশের একটি পোস্টে ঢুকে পড়ে।

তুমুল বৃষ্টির মধ্যে মঈনুল, তানিয়া ওই পুলিশ পোস্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাড়িটি মঈনুল ও তানিয়াকে চাপা দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মঈনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মঈনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

এঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন মঈনুলের চাচাত ভাই মো. শফী রহমত উল্লাহ। তবে তিনি মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন।

আহত শফী জানান, ওই পুলিশ পোস্টে দাঁড়িয়ে তারা ট্রাক্সির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় হঠাৎ একটি গাড়ি উড়ে এসে তাদের ওপর পড়ে।

এদিকে এ ঘটনায় গাড়িচালককে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। ঘাতকের পরিচয় কলকাতার নামি রেস্তোরাঁ আরসালান-এর মালিকের ছেলে পারভেজ আরসালান। দুর্ঘটনায় সময় আরসালান নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন।

ঘটনার তদন্তকারী পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনার সময় পারভেজ তার জাগুয়ারটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চালাচ্ছিলেন।

শনিবারই ঘাতক পারভেজকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার।

পত্রিকাটি জানায়, ওই দুর্ঘটনায় পুলিশ জাগুয়ারের চালকের বিরুদ্ধে প্রথমে ৩০৪এ ধারায় মামলা দায়ের করেছিল। যেটি অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা হলেও জামিনযোগ্য ছিল। কিন্তু পারভেজকে গ্রেফতারের পর ৩০৪ ধারায় মামলা পরিবর্তন করে। এটি জামিন অযোগ্য ধারা।

চোখের চিকিৎসার জন্য মঈনুল ও তানিয়া কলকাতায় গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে