মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সোমবার দেশের তিন জেলা থেকে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সবজি বিক্রেতা, ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে এক মসজিদের খাদেম ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত জুনে ঢাকায় ডেঙ্গু দেখা দেওয়ার পর ক্রমশ এই রোগের বিস্তার ঘটে তা সারা দেশে ছড়িয়েছে। সরকারি হিসাবে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুতে ৪০ জনের মৃত্যুর কথা জানালেও গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে অন্তত ১৬৬ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান (৪০) গত বৃস্পতিবার থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
সোমবার সকাল ৭টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরপি) শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান।
মিজানুরের বাড়ি খুলনার রূপসা উপজেলার খাঁজাডাঙ্গা গ্রামে।
খুলনার সিভিল সার্জন এ এস এম আব্দুর রাজ্জাক জানান, খুলনায় সোমবার পর্যন্ত ৫৭৩ জন ডেঙ্গেুতে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি ৮৯ জনের মধ্যে ২০ জন সোমবার ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত খুলনায় এক বৃদ্ধাসহ পাঁচজনের জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার ভোরে আনোয়ার হোসেন (৪০) নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার বলেন, আনোয়ার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার দুপুরে তাকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, শরীরের বিভিন্ন অর্গানের কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলার কারণে আনোয়ারের মৃত্যু হয়।
আনোয়ার নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার আব্দুল লতিফের ছেলে।
লক্ষ্মী নারায়ণ জানান, ময়মনসিংহ মেডিকেলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ২৬ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। এ পর্যন্ত হাসপাতালে মারা গেছে তিনজন।
আর গত ২৪ জুলাই থেকে সোমবার পর্যন্ত মোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ১০৬০ জন; এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছে ৮৮৩ জন। বর্তমানে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছে ১৭৪জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেলোয়ার হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
মৃত দেলোয়ার হোসেন (৩৫) ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীচর এলাকার শেখ শফিউদ্দিনের ছেলে। তিনি শহরের পূর্বখাবাসপুর মসজিদের খাদেম হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, দেলোয়ার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোববার তাদের র হাসপাতালের পুরষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। সোমবার সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
দোলোয়ারের বাবা শফিউদ্দিন শেখ বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে প্রথমে তাকে ফরিদপুর সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি, সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর হাসপাতালে আনা হয়।
ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ জন ভর্তি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ফরিদপুরের এ রোগে ভর্তি রয়েছে ৩৪৬ জন রোগী।
দেলোয়ারসহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হলো বলে জানান তিনি।