কাশ্মীর ইস্যুতে প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করতে চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের কাছে এমন ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। শিগগিরই তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আবারও কাশ্মীর ইস্যুতে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘ভৌগোলিকভাবে কাশ্মীরের অবস্থান খুব জটিল। সেখানে হিন্দু, মুসলিম সবাই বসবাস করে। আমি বলব না যে তারা এখন একসঙ্গে খুব ভালো আছে।’ বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল আমেরিকা। একই বিষয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে টেলিফোনও করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। টেলিফোনে জম্মু ও কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে ‘নমনীয় ভাষা’ ব্যবহার করতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে বলা হয়। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইমরান খানকে ফোন করেন ট্রাম্প। সোমবার ট্রাম্পের এ ফোনালাপের কথা জানিয়েছে এনডিটিভি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও ফোনালাপ হয় ট্রাম্পের। প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী সে কথোপকথনে পাকিস্তানি নেতাদের ‘চরম বাগ্বিতণ্ডা এবং ভারতবিরোধী সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার’ বিষয়টি উত্থাপন করেন মোদি।
হোয়াইট হাউস বলছে, ফোনালাপের সময় ট্রাম্প জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে ইমরানকে নমনীয় ভাষা ব্যবহার করতে বলেছেন। ট্রাম্প উভয় পক্ষকেই সংযত হতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ট্রাম্প ও ইমরান খান উভয়েই যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপচারিতায় মোদি সন্ত্রাস ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ রোধের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতবিরোধী সহিংস বক্তব্য এবং উসকানি আঞ্চলিক শান্তির জন্য কল্যাণকর নয়।
৫ আগস্ট ভারতের বর্তমান বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। রাজ্যটিকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। নয়াদিল্লির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করার সিদ্ধান্ত জানায় তারা। ভারত অবশ্য জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পদক্ষেপকে একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বিবেচনা করছে। তাদের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে ‘বাস্তবতা মেনে নেওয়ার’ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রধান উপপ্রেস সচিব হোগান গিডলি বলেছেন, ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং মার্কিন-ভারত কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। গিডলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে থাকবে।