শরণার্থীদের অনাগ্রহ, শুরু হয়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা
ফাইল ছবি

মিয়ানমারের সম্মতির পর বাংলাদেশের পক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ সম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও আজ বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা গেল না।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও আজ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত এবারও আটকে গেল প্রত্যাবাসন কর্মসূচি। তবে তৃতীয় দিনের মতো তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার চলছে।

universel cardiac hospital

এর আগে গত বছর নভেম্বর মাসে একই রকমের একটি প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানান, সাক্ষাৎকার দেয়া ২৯৫ রোহিঙ্গা পরিবারের কেউই স্বেচ্ছায় মিয়ানমার ফিরে যেতে রাজি নয়।

শালবাগান ক্যাম্প ইনচার্জ মো. খালেদ হোসেন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি।

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থাসহ (ইউএনএইচসিআর) বিভিন্ন এনজিওর সমন্বয়ে এ কার্যক্রম চলবে।

এদিকে তৃতীয় দিনের মতো তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার চলছে। গত দুদিনে ২৩৫ পরিবারপ্রধানের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয় বলে জানান তিনি।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় শরণার্থী ত্রাণ, পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, আমরা বুধবার ২১৪ পরিবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। এখন তাদের বক্তব্যগুলো যাচাই-বাছাই করছি। পরিবারগুলোর বক্তব্য বিচার-বিশ্লেষণ করছি।

এদিকে বুধবার ৬১টি এনজিও এক যুক্ত বিবৃতিতে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।

এতে তারা বলেছে, মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনবিষয়ক সাম্প্রতিক খবরে শঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। তারা নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত। এনজিওগুলো মিয়ানমারে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা ব্যক্ত করে নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসন নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমি রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে এনজিওগুলো নিরুৎসাহিত করছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন অভিযোগ করার পর প্রত্যাবাসন শুরুর সব প্রস্তুতি সম্পাদনের মধ্যেই তারা এ বিবৃতি দিয়েছে।

ঢাকার সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকার বদ্ধপরিকর। তবে এ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন সামনে রেখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া শুরু করার আগ্রহ দেখিয়েছে। চীন ও ভারত প্রত্যাবাসনের পক্ষে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি এক কূটনীতিক বুধবার বলেছেন, প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারলে মিয়ানমার জাতিসংঘে বাংলাদেশকে দোষারোপ করবে।

এদের ফিরে যাওয়ার বিষয়টি পরস্পরকে দোষারোপের খেলায় হারিয়ে যাবে। ফলে ফেরার কার্যক্রম শুরু করাটা খুবই জরুরি।

২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ কিংবা ২৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। তিনি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে