বাঁধনের স্বীকারোক্তি : মাদরাসাছাত্রী আসমাকে ধর্ষণের পর হত্যা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

আসমা আক্তার (বাঁয়ে) এবং মারুফ হাসান বাঁধন
আসমা আক্তার (বাঁয়ে) এবং মারুফ হাসান বাঁধন। ছবি : সংগৃহিত

পঞ্চগড়ের মাদরাসাছাত্রী আসমা আক্তারকে (১৭) ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে মামলার প্রধান আসামি এবং আসমার প্রেমিক মারুফ হাসান বাঁধন (১৭)।

জানা যায়, সেদিনের ঠিক কী ঘটেছিল তাও জানিয়েছে পুলিশের কাছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাঁধনকে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। যদিও বাঁধনের পরিবার বলছে বাঁধন নিজের ইচ্ছায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

universel cardiac hospital

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পঞ্চগড়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা বাঁধনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, প্রেমের সূত্র ধরে বাঁধন আসমাকে নিয়ে ১৮ আগস্ট পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে করে রাতের বেলায় ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছে। সেখানে রাতের খাবার খাওয়ার পর স্টেশনের আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু পরিচয়পত্র না থাকায় এবং প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় কেউ তাদের হোটেলে থাকতে দেয়নি।

পরে বাঁধন ও আসমা বলাকা কমিউটারের একটি পরিত্যক্ত বগিতে উঠে শুয়ে পড়ে। এ সময় তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে অপরিচিত চারজন যুবক।

পরে বাঁধনকে পাশের বাগিতে নিয়ে বেঁধে রেখে আসমাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় তারা। পরে বাঁধনও সেখান থেকে পালিয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়।

পরদিন সকালে ওই পরিত্যক্ত বগি থেকে আসমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বাধন বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।

এই ঘটনার পর গত ২০ আগস্ট আসমার চাচা রাজু ইসলাম প্রেমিক মারুফ হাসান বাঁধনকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসমার ময়নাতদন্তেও প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে চারপাশে আসমা হত্যার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বাঁধন। পুলিশের দাবি, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাঁধনকে তারা গ্রেপ্তার করে। তবে কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বলছে না।

বাঁধনের মা বিলকিস বেগম বলেন, বাঁধন নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছে।

এদিকে, বাঁধনের সঙ্গে ওই চার যুবকের যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বাঁধনকে কমলাপুর রেলওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পঞ্চগড় পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাছান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুদর্শন রায় এবং পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবু আক্কাস আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার ইউসুফ আলী বলেন, বাঁধনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আত্মসমর্পণ হয় আদালতে, পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের কোনো সুযোগ নেই। তাকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনা এবং মামলা কমলাপুর রেলওয়ে থানাতে হওয়ায় মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারব না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে