রাজধানী ঢাকার বাজারে ঈদের ছুটির রেশ কাটতে না কাটতেই হঠাৎ করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ঈদের ছুটির আগে বাজারে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ৬০ টাকা পর্যন্ত দাম গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, অন্য সময়ের তুলনায় বাজারে ক্রেতাদের ভিড় ছিল কম; কিন্তু বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম।
মিরপুর ১ নম্বর বাজারের বিক্রেতা নাসির উদ্দিন বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ঈদের পরে হঠাৎ বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার বাজারে দেশি পেঁয়াজ বড়গুলো ৬০ ও ছোটগুলো ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়, যা ঈদের আগে ছিল ৪০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ঈদের আগে ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা ছিল।
এদিকে কারওয়ান বাজারের পাইকারি আড়তে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৫০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কয়েক দিন ধরে হু হু করে বাড়ছে। এ কারণে পাইকারিতে দাম বেড়ে গেছে। আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর বাজারদর নির্ভর করে। কারণ, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম।
শুধু পেঁয়াজ নয়, আদা ও রসুনের দামও চড়া। ঈদের আগে থেকেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আদা ও রসুন। এখন বাজারে প্রতি কেজি চীনা আদা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা আর ইন্দোনেশিয়ার আদা ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা তেমন একটা দেখা যায় না। দু-একটি দোকানে থাকলেও তা ২০০ টাকা কেজি। আর দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম ২৪ ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও মধ্যপ্রদেশ বন্যার কবলে পড়েছে। এসব রাজ্যে পেঁয়াজ উৎপাদন বেশি হয়। এ কারণে ভারতেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মহারাষ্ট্রের নাসিকের বড় পাইকারি পেঁয়াজ কেনাবেচার কেন্দ্র লাসালগাঁওয়ে গত মঙ্গলবার পেঁয়াজ গড়ে ২২ রুপি কেজি দরে বিক্রি হয়, যা এক মাস আগে ১২ রুপি ছিল। ভারতে কেজিতে ১০ রুপি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও দাম বেড়ে গেছে।
এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দামও কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি চিনিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। এ ছাড়া চাল, ডাল, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে।