পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দ্বিতীয়বারও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় মিয়ানমারকে দায়ী করেছেন।
মন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের অনীহা এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় দ্বিতীয়বার দিনক্ষণ ঠিক করেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতেই হবে এবং মিয়ানমারও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ শনিবার সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
আবদুল মোমেন বলেন, আমরা মিয়ানমারকে আগেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম রোহিঙ্গাদের ১০০ জন নেতাকে সেখানে নিয়ে যেতে। তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সেখানে কী কী করা হয়েছে সেগুলো দেখে এসে তারা অন্যদের বোঝাবে। সেখানে চীন ১০০টি এবং ভারত ২৫০টি বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে। সেগুলো দেখে এসে তারা যখন অন্য রোহিঙ্গাদের বলতো তখন তারা আশ্বস্ত হতো। প্রত্যাবর্তনে রাজি হতো। কিন্তু মিয়ানমার সেটা করেনি। তাই প্রত্যাবর্তনের ব্যর্থতার দায় তাদেরই।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
গত ২২ আগস্ট দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক হলেও রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহে তা সম্ভব হয়নি। এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম সময়সীমা ঠিক হয়েছিল। তখনও রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় একজনকেও রাখাইনে পাঠানো যায়নি।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতা ও নিপীড়নের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া অন্তত সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ছিলেন।
- কাশ্মীর বিতর্কের মধ্যেই আমিরাতের সর্বোচ্চ সম্মাননায় ভূষিত হলেন মোদি
- তারেককে ফিরিয়ে আনতে আইনি প্রক্রিয়া চলছে : ওবায়দুল কাদের
২০১৮ সালের জানুয়ারি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়। একই বছরের ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তবে আবারও হামলার মুখে পড়ার আশঙ্কায় রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে অস্বীকৃতি জানানোয় ব্যর্থ হয় ওই উদ্যোগ।