প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো চলে এসেছেন। এসে গেছেন পেস বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট। ছুটি শেষে কাল সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকও। আর ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ানের অধীনে ২৪ ক্রিকেটার কন্ডিশনিং ক্যাম্প তো শুরু করে দিয়েছেন ১৯ আগস্ট থেকেই। এত দিনে তবু কোথায় যেন একটা অপূর্ণতা থেকে গেছে। কদিন পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট। বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানই যে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে নেই।
বিশ্বকাপ রাঙিয়ে লম্বা একটা ছুটি নিয়েছিলেন সাকিব। শ্রীলঙ্কা সফরে যাননি সে কারণেই। ছুটির পর গেছেন পবিত্র হজ পালন করতে। সেখান থেকে ফিরে কদিন দেশে কাটিয়ে সাকিব পরিবারকে সময় দিতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। কাল রাত তিনটার দিকে তার ঢাকায় এসে পৌঁছার কথা। দেশে ফিরেই আজ কন্ডিশনিং ক্যাম্পে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান, ‘আজ (কাল) রাতে সাকিব ফিরছে। কাল সে (আজ) দলে যোগ দেবে। অধিনায়ক, নির্বাচক ও প্রধান কোচকে নিয়ে কাল (আজ) আমরা বসব।’
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সামনে রেখে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের সঙ্গে সাকিব, ডমিঙ্গো ও নির্বাচকদের এই বৈঠকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ দলের ‘থিংকট্যাংক’ আজ অনেকটাই ঠিক করে ফেলবে আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডটা কেমন হবে। কেমন হবে চট্টগ্রামের উইকেট। উইকেটের বিষয়টি বেশ ভাবাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। খেলাটা তো আর অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড কিংবা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো উপমহাদেশের বাইরের কোনো দলের সঙ্গে নয় যে নির্দ্বিধায় ঘূর্ণি উইকেট বানানো গেল। আফগানিস্তান দলেও দুর্দান্ত কিছু স্পিনার রয়েছে। স্পিন-সহায়ক উইকেট পেলে এক রশিদ খান যে পরীক্ষা নেবেন, সেটি দিতে গিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা হয়ে যাবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।
বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে তাই ভাবতে হচ্ছে স্পিন-সহায়ক উইকেটের বাইরে অন্য কোন কৌশল অবলম্বন করা যায়। বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণটাও এমন ধারালো নয় যে পেস-সহায়ক সবুজ উইকেট বানিয়ে আফগান ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তোপ দাগবে। ন্যাড়া উইকেটে খেলাটা যথার্থ কি না—এসব নিয়েই আজ আকরাম-মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে আলোচনা করবেন সাকিব-ডমিঙ্গো। কাল ঐচ্ছিক অনুশীলন শেষে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম অবশ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উইকেট যেমনই হোক, তৈরি হতে হবে তাদের ‘আমাদের এখনো জানানো হয়নি (উইকেট নিয়ে)। তবে যে উইকেট দেওয়া হোক স্পিন কিংবা ন্যাড়া, ভালো বোলিং করতেই হবে। সে অনুযায়ী আমাদের তৈরি হতে হবে।’
- আরও পড়ুন, ভারতের ভাবনায় পাকিস্তানের সাবেক কোচ!
সোমবার থেকে শুরু হওয়া কন্ডিশনিং ক্যাম্প প্রায় শেষ দিকে। কাল থেকে পুরোপুরি শুরু হয়ে যাচ্ছে স্কিল অনুশীলন। চলবে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত। প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে মিরপুরেই ৩০ ও ৩১ আগস্ট লাল ও সবুজ দলে ভাগ হয়ে ২৪ ক্রিকেটার খেলবেন দুদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ। তার আগেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াড দিয়ে দেবেন নির্বাচকেরা। বাংলাদেশ টেস্ট দল চট্টগ্রামে চলে যাবে ১ সেপ্টেম্বর। নিজেদের মধ্যে দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচের ঠিক পরেই ১ সেপ্টেম্বর শুরু চট্টগ্রামে আফগানিস্তান একাদশের বিপক্ষে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে আরেকটি দুদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ—সংক্ষিপ্ত সময়ে এত ক্রিকেটার সরবরাহ করা একটা চ্যালেঞ্জই বটে। মিনহাজুল অবশ্য চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন, ‘কদিন আগেই আমাদের তিন-চারটা দল একসঙ্গে খেলেছে। আশা করি এবারও সামলাতে পারব। তবে টেস্ট স্কোয়াডটা আমরা দিয়ে দেব ২৭ তারিখেই।’
অধিনায়ক যোগ দিচ্ছেন। প্রধান কোচ, পেস বোলিং কোচ, ফিল্ডিং কোচ, ট্রেনার—সবাই চলে এসেছেন। অপূর্ণতা বলতে নেই শুধু স্পিন বোলিং কোচ। সদ্য চূড়ান্ত হওয়া ড্যানিয়েল ভেট্টোরি যোগ দেবেন আগামী নভেম্বরে ভারত সফরের আগে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে বাংলাদেশের স্পিনাররা কার অধীনে কাজ করবেন, সেটি অবশ্য আকরাম কাল নিশ্চিত করতে পারেননি, ‘আপাতত বোলাররা স্থানীয় স্পিন কোচদের সহায়তা নিচ্ছে। তবে স্পিন বিশেষজ্ঞ বলতে যা বুঝি, সেটি ছাড়াই কাজ চলবে কিছুদিন। কাল (আজ) দেখি এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করব।’