ওকলাহোমায় জনসন অ্যান্ড জনসনকে জরিমানা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনকে ৪ হাজার ৮শ কোটি টাকা জরিমানা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা রাজ্যের একটি আদালত।

সোমবার এই রায় দেওয়া হয় বলে জানা গেছে। জনসন অ্যান্ড জনসন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানা যায়, চতুর কৌশলে আসক্তি সৃষ্টিকারী ব্যথানাশক ওষুধ বিক্রির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সঙ্কট সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার দায়ে এই কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়।

রায়ে ডিস্ট্রিক্ট জাজ থাড বাল্কম্যান বলেন, জনসন অ্যান্ড জনসন ভুল প্রচারে অপিওয়ড সক্রিয় ওষুধের প্রচার চালিয়েছে। স্বাস্থ্যগত বিষয়ে অবগত থেকেও আপোষ করেছে কোম্পানিটি। ওকলাহোমাকে এই ভার বইতে হচ্ছে। আসক্তি, অতিরিক্ত ওষুধ গ্রহণ, সন্তানে অনীহাসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে ভুক্তভোগীদের।

জনসন অ্যান্ড জনসনের কাছ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করে তা অপিওয়েড আসক্তদের চিকিৎসায় ব্যবহারের করার জন্য আদেশে বলা হয়।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, এই সঙ্কটের ‘হোতা’ হল জনসন অ্যান্ড জনসন, কারণ তাদের বিপণন কৌশল আর চেষ্টার ফলেই চিকিৎসকরা অকাতরে প্রেসক্রিপশনে অপিওয়েড লিখে গেছেন, যা এ আসক্তিসৃষ্টিকারী ওষুধের অতি ব্যবহারে ইন্ধন যুগিয়েছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ বিভাগের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার শুনানিতে বলা হয়, আসক্তি সৃষ্টিকারী ওষুধ বা অপিওয়েডের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে ১৯৯৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে কেবল ওকলাহোমাতেই মারা গেছেন অন্তত ছয় হাজার মানুষ।

অবশ্য জনসন অ্যান্ড জনসন বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। তাদের দাবি, ওষুধের প্রচারে তারা যা যা বলেছে, তার সবগুলোরই বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি আছে, কোনো মিথ্যা তথ্য তারা দেয়নি। 

এক বিবৃতিতে জনসন অ্যান্ড জনসন বলেছে, ২০০৮ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ ব্যথানাশক ওষুধ বিক্রি হয়েছে, তার মধ্যে তাদের তৈরি ওষুধের পরিমাণ ১ শতাংশেরও কম।

জনসন অ্যান্ড জনসন জানায়, এই রায় ত্রুটিপূর্ণ। আমাদের ওষুধ বা প্রচারের কারণেই ওকলাহোমার অপিওয়েড সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে- এমন অভিযোগের কোনো প্রমাণ রাষ্ট্রপক্ষ হাজির করতে পারেনি।

ওকলাহোমার অ্যাটর্নি জেনারেল রাজ্যে আসক্তি সঙ্কটের মাত্রা বিবেচনা করে জনসন অ্যান্ড জনসনকে ১৭ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করার আবেদন করেছিলেন এ মামলায়। 

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আদালতে একই ধরনের অভিযোগে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই হাজার মামলা রয়েছে, যার প্রথম রায়ে জনসন অ্যান্ড জনসনকে জরিমানা করা হলো।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে