এক সপ্তাহের ব্যবধানে জুসেপ্পে কোন্তে আবারও ইতালিতে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। মধ্য বামপন্থী ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডি) সাধারণ সম্পাদক জিঙ্গারেতি ও ফাইস্টার মুভমেন্ট সাধারণ সম্পাদক লুইজি দি মাইও দল জোট বেঁধে রাষ্ট্রপ্রতি সেরজো মাতারেল্লার কাছে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করতে প্রস্তাব দিলে রাষ্ট্রপতি প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার কুইরিনাল ভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফের কোন্তেকে দায়িত্ব দেন। সপ্তাহের মধ্যে একই ব্যক্তি দু’বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ইতালিতে বেশ আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়। দেশটির নাগরিকরা ভোট ছাড়া এভাবে সরকার নির্বাচনে সন্তুষ্ট না হলেও তারা মনে করেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত টিকে থাকাই হবে নতুন সরকার ও নতুন মন্ত্রী সভার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
চলতি মাসে সরকার সঙ্কটের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে এ নিয়ে ইতালির রাজনীতিতে চলছিল কঠিন সমীকরণ। নতুন সরকার নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো।
প্রধানমন্ত্রী কোন্তে পদত্যাগের পর ইতালিতে সরকার সঙ্কট দেখা দেয়। দেশটির অর্থনীতির স্বার্থে রাষ্ট্রপতি সেরজো মাতারেল্লা নতুন আরেকটি সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। যতদ্রুত সম্ভব একদল আরেক দলের সাথে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে জোট বেঁধে উভয়ের সম্মতিতে নতুন সরকার নির্বাচন করতে জোর তাগিদ দেন।
অন্যথায় রাষ্ট্রপ্রতি নতুন আরেকটি নির্বাচন করার আহ্বান জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে। এরপরই নানা শর্ত সাপেক্ষে ডানপন্থী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও ফাইস্টার মুভমেন্ট জোট বেঁধে কোন্তেকে ফের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেন।
অন্যদিকে কট্টর অভিবাসী বিরোধী লেগা নর্দ দলের মাত্তেও সালভিনি (সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) সংসদে থাকবেন বিরোধী দল হিসেবে। সালভিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, এভাবে সরকার গঠনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার চুরি করা হয়েছে। ২০১৮ নির্বাচনে জনগণ ভোটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি।
- আরও পড়ুন, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করলেই কারাদণ্ড
তিনি এই সরকারকে ব্রাসেলস ও জার্মানির আশীর্বাদ সরকার হিসেবে ইঙ্গিত করেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোন্তে নতুনভাবে নির্বাচিত হওয়ার পরপরই নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের জন্য জোটের সাথে বসবেন। এরই ফলশ্রুতিতে তিনি রাষ্ট্রপ্রতির সাথে বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেন এবং নতুন মন্ত্রী পরিষদ গঠনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন।
এই সরকার আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আসন্ন মন্ত্রিপরিষদ গঠনের পর টিকে থাকতে চেষ্টা করবে। তাদের মেয়াদ ২০২৩ সাল পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নির্বাচনে কোনো দল এককভাবে সরকার গঠন করার মতো ভোট পায়নি। ফলে কট্টর ডানপন্থী লেগা নর্দ সাধারণ সম্পাদক সাবেক সরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনি ও ফাইস্টার মুভমেন্ট লুইজি দি মাইও জোট বেঁধে সরকার গঠন করে।
এক বছরের মধ্যে সরকার পদত্যাগ করায় চরম অস্থিরতা দেখা দেয় ইতালিতে। পাশাপাশি লেগা নর্দের সাথে ফাইভস্টার মুভমেন্টের কথায় বনিবনা না হওয়ায় তাদের জোট ভেঙে যায়।