রিফাত হত্যা : মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট

বরগুনা প্রতিনিধি

রিফাত হত্যা
ফাইল ছবি

বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে ৭ নম্বর আসামি করে ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ।

আজ রোববার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।

universel cardiac hospital

বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন চার্জশিট দাখিলের খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক- এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক আসামি ১০ জন, তাদের মধ্যে সাত নম্বরে রয়েছেন মিন্নি নাম।  আর অপ্রাপ্ত বয়স্ক আসামি ১৪ জন।

রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্র সম্পর্কে পুলিশ সুপারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পর পুলিশ নিরবচ্ছিন্নভাবে গভীর তদন্ত শেষে ২৪ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪/২১২/১০৯/১১৪/১২০-বি(১) ধারায় বরগুনা সদর থানার অভিযোগপত্র ২৮০(১) বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

চার্জশিটে উল্লেখিত আসামিদের ব্যাপারে আর কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চার্জশিটের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে।

গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন বিকালে  মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন, যেখানে মিন্নিকে ১ নম্বর সাক্ষী করা হয়।

পরে ঘটনা ভিন্ন দিকে মোড় নেয়, যখন ঘটনার ১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই রিফাতের বাবা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, রিফাত হত্যায় মিন্নিও জড়িত।

এর আগে হামলাকারীরা রিফাতকে কুপানোর সময় মিন্নি তাদের বাধা দেন- এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হলে ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে।

রিফাতের বাবার অভিযোগের জবাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন মিন্নি। তিনি রিফাতের বাবার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

পরে ২৯ জুলাই মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বরগুনার এসপি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, রিফাত হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন মিন্নি।

তদন্তাধীন মামলা নিয়ে এসপির এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন ও আসামির স্বীকারোক্তি গণমাধ্যমে ফলাও করার ঘটনায় উচ্চ আদালত মিন্নির জামিন মঞ্জুরের রায় ঘোষণার দিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে