খুন হওয়ার ৫ বছর পর ফিরে আসা আবু সাঈদ (১৫)-কে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে ২ দিনের রিমান্ড শেষে আদালত ওই কিশোরকে আজ কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে রিমান্ডে থাকা আবু সাঈদের বাবা মোহাম্মদ আজম, মা মাহিনুর বেগম ও আত্মীয় আব্দুল জব্বারকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সিএমএম আদালত কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন। যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান লিটন গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাজারীবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লন্ডন চৌধুরী আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। শুনানিকালে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট এ আসামিদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সিএমএম আদালত।
প্রসঙ্গত, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল বাবা মো. আজম একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। ওই জিডির পর তিনি অজ্ঞাতানা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবীর মামলা করেন।
মামলায় বিভিন্ন সময় আসগর আলী, মিলন, মো. সাইফুল ইসলাম হাওলাদার, সোনিয়া আক্তার, তার ভাই আফজাল হোসেন ও মো. শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তী সময়ে মামলায় ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সাইফুল ও আফজাল ঢাকা সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
স্বীকারোক্তিতে তারা বলেন, ভিকটিম আবু সাঈদকে তারা অপহরণ করে হত্যার পর লাশ বরিশালগামী লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে দেন।
ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ডিবির ধানমন্ডি জোনাল টিমের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুহুল আমিন। তিনিই আসামির স্বীকারোক্তি করানোর জন্য আদালতে উপস্থাপন করেন।
মামলাটি তদন্তের পর বর্তমানে রাজধানীর ডেমরা থানায় কর্মরত রুহুল আমিনই ২০১৫ সালের ১৫ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে আসগর আলী ও মিলনকে বাদ দিয়ে অপর ৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মামলাটির চার্জশিট হওয়ার পর ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নাশি মামলা নং-১০৮৪/২০১৮ মামলা হিসেবে বিচারাধীন আছে। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।
ওই মামলায় আপোষের কথা বলে বাদী আজম ৫ লাখ টাকাও নেয়। সম্প্রতি স্বীকার করে- তার ছেলে আবু সাঈদ বেঁচে আছেন।
- রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতীয়ভাবে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে : রিজভী
- আছাদুজ্জামান মিয়া জাতীয় নিরাপত্তা সেলের প্রধান নির্বাহী
গত ৩০ আগস্ট ছেলেকে নিয়ে আরও ২ লাখ টাকা নেয়ার জন্য পল্লবী থানাধীন একটি বাসায় আসেন। এরপরই থানা পুলিশ নিয়ে তাদের আটক করে প্রতারণার মামলা করেন অপহরণ মামলার আসামি থাকা মোসা. সোনিয়া আক্তার। ওই মামলায় ৩১ আগস্ট আদালত তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, মিথ্যা অপহরণ ও হত্যা মামলায় সোনিয়া আক্তার, তার ভাই আফজাল হোসেন ও আত্মীয় সাইফুল ইসলাম ৬ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত কারাভোগ করেন। এছাড়া আফজাল হোসেন ও সাইফুল ইসলামকে জোর করে স্বীকারোক্তিতে বাধ্য করা হয় বলে তাদের দাবী।