সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল বরিস জনসনের সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বরিস জনসন
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন - ছবি: এএফপি

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বরিস জনসনের সরকার।

মঙ্গলবার কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ফিলিপ লি পক্ষত্যাগ করে বিরোধী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (লিব ডেম) এমপিদের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় সরকার।

এর ফলে ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই চুক্তিহীন ব্রেপিট বাস্তবায়ন করা জনসনের জন্য অনিশ্চিত হয়ে গেল। কারণ চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে পার্লামেন্টে একটি বিল আনার কথা বিরোধী ও কনজারভেটিভ পার্টির বিদ্রোহী এমপিদের। এই বিল পাস হলে ঝুলে যাবে ব্রেক্সিট।

অর্থাৎ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এমপিরা নতুন চুক্তি বা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পক্ষে সম্মতি না দিলে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রেক্সিট আটকে যাবে।

তবে সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, চুক্তিহীন ব্রেপিট আটকানোর বিল পাস হলে আগামী ১৪ অক্টোবর আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব সংসদে তুলবেন প্রধানমন্ত্রী জনসন।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ কমন্সে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জনসন বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যেতে সমঝোতা চান তিনিও। তবে ব্রেপিট আটকাতে বিরোধীরা ও কনজারভেটিভ পার্টির বিদ্রোহী এমপিরা যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে করে ইইউর সঙ্গে নতুন সমঝোতায় পৌঁছানোর পথ আটকে যাবে। আর বিদ্রোহীরা যদি সফল হন তাহলে তাকে ব্রেক্সিট পিছিয়ে দিতে অনুনয়-বিনয় করতে হবে এবং তিনি কখনোই তা করবেন না। জনসন এই প্রক্রিয়াকে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের ‘আত্মসমপর্ণের বিল’ বলে কঠোর সমালোচনা করেন।

ফিলিপ লি কনজারভেটিভদের পক্ষ ত্যাগ করায় সরকারি জোটের এমপি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৯ জন। অন্যদিকে বিরোধী জোটে এমপি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২০ জন। স্পিকার এবং অন্যরা মিলে বাকি থাকে আর ১১ জন। ফলে এখন চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ঠেকাতে জনসন সরকারের বিরুদ্ধে কোনো বিল উঠলে তা পাস হওয়ার দুয়ার খুলে গেল। এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোয় জনসনের প্রধানমন্ত্রিত্ব টিকবে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ পার্টির বিদ্রোহী এমপি ফিলিপ হ্যামন্ড বলেছেন, চুক্তিহীন ব্রেপিট ঠেকাতে ‘বিল পাস করানোর জন্য যথেষ্ট সমর্থন আমাদের আছে।’ তবে বিলটি পাস হলে সরকারি দলের বিদ্রোহী এমপিরা জনসনের আগাম নির্বাচনের বিলে সমর্থন দেবেন কি-না, তা পরিষ্কার নয়। আগাম নির্বাচনের অনুমোদন পেতে জনসনকে দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন দরকার। বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন অবশ্য আগাম নির্বাচনকে সমর্থন দেবেন বলে জানা যাচ্ছে।

গ্রীষ্মকালীন ছুটি থেকে ফিরে মঙ্গলবারই সংসদের অধিবেশনে যোগ দেন এমপিরা। এক সপ্তাহের ভেতর ব্রেক্সিট নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে বিরোধীদের। কারণ ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট অধিবেশন স্থগিত করেছেন জনসন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে