শিশুদের পরিচালনার জন্য প্রতিনিয়ত তাদের নানা সময় নানা বিষয়ে নির্দেশনা দিতে হয়। একটি শিশুর সামাজিকতা শিক্ষায় এসব নির্দেশনা বেশ প্রভাব ফেলে। অভিভাবকদের প্রায়ই বলতে শোনা যায় বাচ্চা কথা শোনে না, যা বলি তার উল্টো করে ইত্যাদি।
কিন্তু শিশুর এ ধরনের নেতিবাচক উত্তর বা আচরণের পেছনে রয়েছে শিশুকে যথাযথভাবে নির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে পরিচালনা করতে না পারা। নির্দেশনা যখনই শিশুকে আপনার কথা শুনতে বাধ্য করবে, তখন শিশু সে জিনিসটি না করে নিজের স্বাধীনমতো কাজ করতে চাইবে বা অবাধ্য হবে। তাই শিশুর প্রতি প্রতিটি আচরণে সচেতন হতে হবে।
যতখানি পারা যায় শিশুর সঙ্গে নেতিবাচক নির্দেশনা এড়িয়ে চলতে হবে। শিশুর জন্য নির্দেশনা ইতিবাচক হতে হবে। কেননা নেতিবাচক নির্দেশনায় শিশু প্রতিবাদ করার সুযোগ পায়। ইতিবাচক নির্দেশনায় সে সুযোগ থাকে না।
এ ছাড়া একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নেতিবাচক নির্দেশনা বা প্রস্তাব যা-ই বলি না কেন, এটি ব্যক্তিকে অপ্রিয় করে তোলে। শিশুকে দেয়ালে আঁকতে দেখে আপনি বললেন দেয়ালে এঁকো না। সে হয়তো উত্তর দিল, ‘না আঁকব।’ এক্ষেত্রে শিশুর প্রতি নির্দেশনার ধরনটি হতে পারত এরকম- চলো, আমরা খাতায় আঁকি। এতে শিশুর প্রতিবাদ করার তেমন সুযোগ থাকত না।
‘না’ শব্দটি সবসময়ই নেতিবাচক ফল বয়ে আনে শিশুদের জন্য। বড়দের এই বাধা দেওয়ার প্রবণতার কারণেই সে আত্মবিশ্বাসী হয়ে তৈরি হতে পারে না। এটা শিশুদের মধ্যে অহেতুক ভীতি জন্ম দেয়। তার মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে বড়দের কথাই আর শুনতে চায় না সে।
শিশুকে কোনো কাজ করার জন্য বললে তা যেন আদেশের সুরে না হয়। শিশুকে আদেশ না দিয়ে তাকে প্রস্তাব করতে হবে। যেমন এখন গেমস খেলা বন্ধ কর না বলে বলা যেতে পারে- চলো, আমরা বাইরে খেলতে যাই।
আপনি যখন তাকে বাইরে খেলতে যাওয়ার প্রস্তাব করবেন, তখন সে সহজেই গেমস খেলা বন্ধ করে দেবে। সরাসরি গেমস খেলতে নিষেধ করলে সে অবাধ্য হতো।
- কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে পূর্ণ সমর্থন দেবে সৌদি-আমিরাত
- তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা থাকছে না ২০২১ সাল থেকে
আমরা সাধারণত নেতিবাচক বাক্যই ব্যবহার করি সবচেয়ে বেশি। তাই দেখা যায়, কোনো কাজে ইতিবাচক বাক্য ব্যবহার করে কথা বলাটা একটু কষ্টকর হয়ে ওঠে। এজন্য প্রয়োজন শব্দভান্ডার বৃদ্ধি করা। এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে বিষয়গুলো ভিন্নভাবে চিন্তা করার দক্ষতা অর্জন করা। সরাসরি ‘না’ উচ্চারণ না করে তবেই সম্ভব শিশুকে কোনো কাজ থেকে বিরত রাখা।