আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মামলার দুই সাক্ষী নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা ফুর্তিকে পুনরায় জেরার জন্য বিচারক রোববার আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার তাদের পুনরায় জেরার আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
জেলা জজ আদালতের পিপি হাফেজ আহাম্মদ বলেন, মামলার এক নম্বর সাক্ষী নিশাত সুলতানা ও দুই নম্বর সাক্ষী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি। গত ৩০ জুন ও ১ জুলাই ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে তারা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা পুনরায় তাদের জেরার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও জানান, গত ২৭ মার্চে নুসরাতের শ্লীলতাহানির সময় নিশাত সুলতানা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার কক্ষের বাইরে ছিলেন ও ফুর্তিও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলার আসামি পক্ষের একাধিক আইনজীবী বলেন, এর আগে নিশাত সুলতানা ও নাসরিন সুলতানা ফুর্তি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও আমলি আদালতের বিচারকের কাছেও সাক্ষ্য দেন। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের সামনেও সাক্ষ্য দেন।
এ তিনটি সাক্ষ্যে বেশকিছু অমিল রয়েছে। আসামি পক্ষের আইনজীবীদের মতে, এ দুই সাক্ষীকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে। এজন্য বৃহস্পতিবার আদালতে এই দুই সাক্ষীকে পুনরায় হাজিরের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল বলেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে এই দুই সাক্ষীকে অধিকতর জেরা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত রোববার তাদের আবার আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।