১৯৮১ সালে দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার পরিবারের নামে বরাদ্দ দেওয়া প্রায় ৪৬ একর (মাতাসাগর দিঘী) জমি অন্যের নামে হস্তান্তর ও রেকর্ড করা নিয়ে হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলা দ্রুত শুনানির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আজ রোববার এ আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের কাছ থেকে জমি বন্ধক নিয়ে বন্দোবস্তের শর্ত ভঙ্গ করে এ সম্পত্তি এখন পর্যন্ত দখল করে আছে। এ সম্পত্তি নিয়ে দিনাজপুরে যখন মামলা হয়, তখন সদ্য বিদায়ী আইন সচিব ওনার আমলে অতিদ্রুত সময়ে একটি রায় দিয়ে সেই সম্পত্তি তাদের দখলে হস্তগত করেছেন।
তিনি বলেন, ২০০৫ সালের এ রায়। এতো অল্প সময়ে রায় দেওয়া অনভিপ্রেত মনে হয়েছে। হাইকোর্টে আপিলের পরও শুনানির জন্য মামলা রেডি হয়নি। এখন দ্রুত আপিল শুনানির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
জানা যায়, দিনাজপুরের মহারাজার সম্পত্তি মাতাসাগর দিঘীর ৪৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ জমি ১৯৭৭ সালে অধিগ্রহণ করে সরকার। এই জমি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর কয়েক দিন পর ১৯৮১ সালের ৪ জুন খালেদা জিয়ার পিতা এম ই মজুমদারের মালিকানাধীন দিনাজপুর লাইভস্টক অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্মের নামে বরাদ্দ দেয় সরকার। ওই জমি রেজিস্ট্রি করে নেন এম ই মজুমদার।
তিনি ১৯৮৪ সালে মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সূত্রে সম্পদের মালিকানা পান খালেদা জিয়া, তার মা তৈয়বা মজুমদার, ভাই সাঈদ ইস্কান্দার, শামীম ইস্কান্দার, বোন খুরশীদ জাহান হক ও বেগম শালিনা ইসলাম। কিন্তু খালেদা জিয়াসহ ভাইবোনেরা সবাই মিলে মায়ের নামে সম্পদ লিখে দেন।
এরপর ১৯৮৬ সালের ২৮ জুলাই এই সম্পদের মালিকানা চারদলীয় জোট সরকারের প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল ও তার পরিবারের নামে হস্তান্তর করা হয়। তবে জমিটি সরকারের অনুকূলে রেকর্ড হয়ে যায়। এ অবস্থায় জমির মালিকানা দাবি করে নিজেদের নামে রেকর্ড করার জন্য ২০০৪ সালে দিনাজপুর আদালতে মামলা করেন ফজলুর রহমান পটলের ভাই মিজানুর রহমান।
- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০ সাল থেকে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা
- ভারতের মাটিতে অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা নেই : অমিত শাহ
এই মামলায় উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে ২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল রায় দেন দিনাজপুরের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক (দুলাল)। যিনি পরে আইন সচিব হয়েছিলেন। দিনাজপুর আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন তথা সরকার। এই আপিল এখনও বিচারাধীন।