‘জাতিসংঘ অধিবেশনে তোলা হবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি’

বিশেষ প্রতিবেদক

এ কে আবদুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি জাতিসংঘের আগামী অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুটি আমাদের অগ্রাধিকার হিসেবে রয়েছে। অবশ্যই সেখানে বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।

মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে ঢাকা লেডিজ ক্লাবে কুসুমকলি স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস, ব্যাগ ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অনেক টাকা পয়সা দিচ্ছে। তারা বড় দাতা। এই সহায়তা চালিয়ে যাবে। তবে মিয়ানমারের জেনারেলের বিরুদ্ধে একটি ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া তারা আর কিছুই করেনি। মিয়ানমারকে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা দিয়েছে। একটি নেভাল চুক্তিও করেছে।

কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো যাবে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। আশা করছি আগামীতে কোনো সময় প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখনো আলাপ আলোচনা চলছে। কেউ কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন। শুধু শুধু বসেতো লাভ নেই। আমরা অনেকবার বসেছি। আমরা চাই আলোচনা যাতে ফলপ্রসূ হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সমস্যার সমাধান না হলে এই এলাকায় যতগুলো রাষ্ট্র আছে, চীন, ভারত, মিয়ানমার, বাংলাদেশে আগামীতে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হবে। আর অনিশ্চয়তা তৈরি হলে উন্নয়নও হয় না, লক্ষ্যবস্তুগুলোও অর্জন সম্ভব হবে না। আমরা তাদেরকে এটাই বলেছি। এখানে যদি ঝামেলা হয়, তাহলে সেটা সবার জন্যই অমঙ্গল হবে।

রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কমিটি করার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে হুটহাট করে করলে হবে না। কাদেরকে কমিটিতে নিলে গ্রহণযোগ্য হবে সেগুলোও আমরা চিন্তাভাবনা করছি। এখনো পুরোপুরি হয়নি।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সুযোগ সুবিধা কেড়ে নেওয়ার কথা বলছে, এমন প্রশ্নে সংগঠনগুলোকে জিজ্ঞেস করার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা রোহিঙ্গাদের নিজেদের জায়গায় নিয়ে গেলে আমরা স্বাগত জানাবো। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যারা এসব বলেন খুব সহজে, কিন্তু করা খুব কঠিন। যারা এসব কথা বলেন তারা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে না কেন। সেখানে নিয়ে গিয়ে এসব কথা বলে না কেন। রাখাইনে এখনো বসবাসের কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি বলে জেনেছি, সেখানে গিয়ে বলুক। আমরা রোহিঙ্গাদের অনেক উন্নত অবস্থান দেখেছি। হ্যাঁ, তবে আপনি যখন শরণার্থী হয়ে থাকবেন, তখন আপনাকে অনেক কিছু বিসর্জন দিতে হবে বাধ্য হয়ে। আমাদের তো এত সম্পদ নেই। আমরা তাদের রেখে দেবো। যারা পারেন তারা নিয়ে যান।

রোহিঙ্গাদের হাতে পাসপোর্ট এবং জাতীয় পরিচয়পত্র যাওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আমরা শক্ত অবস্থান নিয়েছি। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে তারা যাতে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে না পারে সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছি। ভুয়া হলে আমরা সেগুলো জব্দ করবো।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে