দেশের জনগণ এখন ‘প্রজায়’ পরিণত হয়েছে : সুলতানা কামাল

মত ও পথ প্রতিবেদক

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল। ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একসময় জনমানুষের দল ছিল। কিন্তু এখন দলটি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল। আর দেশের জনগণ এখন ‘প্রজায়’ পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুলতানা কামাল। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে যাত্রী অধিকার দিবসের ঘোষণা উপলক্ষে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

universel cardiac hospital

সুলতানা কামাল বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায়। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ জনমানুষের দল ও মুক্তিযুদ্ধে তারা নেতৃত্ব দিয়েছে। অন্য যেকোনো দলের তুলনায় মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ততাও বেশি। কিন্তু দলটি নাগরিকদের নাগরিকবোধটা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ। বরং ক্রমশ তাদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। আমরা এখন প্রজায় পরিণত হয়েছি।

পাশে বসা সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদলকে লক্ষ্য করে বলেন, বাদল ভাই যেকোনো সমস্যায় বলেন, আপনারা বলেন। আমরা কেন বলব? আমরা তো আপনাদের পাঠিয়েছি সংসদে। কথা তো আপনারাই বলবেন। আমরাই যদি বলতে থাকি তাহলে আপনারা কী বলবেন? তাহলে সংসদ আছে কিসের জন্য?

যাত্রী অধিকার দিবস পালনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, প্রত্যেকটি সরকার জোর গলায় বলে তারা নাকি জনগণকে সেবার দেয়ার জন্যই কাজ করেন। ভালো করার জন্য সরকারে যেতে যান ও ওখানে বসে আছেন। একটু প্রমাণ করে দেখান। রাস্তায় আমরা যারা চলাচল করি তাদের নিরাপত্তাবিধান করতে আপনারা ব্যর্থ হননি।

সুলতানা কামাল বলেন, যে বাসগুলো রাস্তায় নামানো হয়, সেগুলো কারা নামায়, কার পারমিশনে রাস্তায় চলে। এখন বাসে উঠে আমি সিট পাবো কি না, বসতে পারবো কি না, জান নিয়ে গন্তব্যে যেতে পারবো কি না, নারীরা মান-সম্মান নিয়ে, ধর্ষিত না হয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবো কি না সে সমস্যাও এসে দাঁড়িয়েছে। এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে? কেউই দায় নিচ্ছি না। বরং অন্যের ওপর দায়টা ছেড়ে দিচ্ছি।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশের যে কোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছি। আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে আমাদের অর্থনীতি হংকং, সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদল, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, পরিবহন নেতা হোসেন আহমদ মজুমদার, যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, ফাহমিদুল হক লিটন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে