পাবনায় গৃহবধূকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণ’ এবং থানায় তাদের একজনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরেক আসামি ওসমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পাবনার (সদর সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান জানান, শুক্রবার ভোরে শহরের সিংগা বাইপাস এলাকা থেকে ওসমানকে তারা গ্রেপ্তার করেন।
ওসমানের বাড়ি (৩৮) সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামে। এ নিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হলো বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টু (৩৮) এবং সাহাপুর যশোদল গ্রামের রাসেল আহমেদ, হোসেন আলী ও মো. সঞ্জু।
পাবনা শহরের সিংগা বাইপাস এলাকায় গত শুক্রবার রাতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের পর ‘ধর্ষণকারীর’ সঙ্গে থানায় বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা তিন সন্তানের জননী ওই নারীর অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ অগাস্ট তাকে তার বাড়িতে নিয়ে এক সহযোগীসহ পালা করে ধর্ষণ করে।
দুইদিন পর তাকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিনদিন আটকে রাখা হয় এবং সেখানে আরও ৪/৫ জন তাকে পালা করে ধর্ষণ করে।
ওই নারী বাড়ি ফিরে স্বজনদের বিষয়টি জানালে ৫ সেপ্টেম্বর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ রাসেলকে আটক করে।
কিন্তু পুলিশ ‘মামলা নথিভুক্ত না’ করে ওই রাতেই রাসেলের সঙ্গে থানায় তার বিয়ের ব্যবস্থা করে বলে ওই নারীর অভিযোগ।
পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পর থানায় মামলা নেওয়া হয়। এ বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ পাবনা থানার ওসি ওবাইদুল হককে কারণ দর্শাতে বলা হয় এবং ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে পুলিশ।
এরপর ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে টেবুনিয়া খাদ্যগুদাম এলাকা থেকে এ মামলার অন্যতম আসামি আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম ঘন্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ জানায়, তার অফিসেই ওই নারীকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়।
তবে ঘন্টুর ওই অফিসে কী কাজ হয় সে বিষয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেনি। তবে ঘন্টুর ‘বৈধ কোনো ব্যবসা’ নেই বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘণ্টুকে আটকের দিনই ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই নারীকে ধর্ষণের আলামত মেলার কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান।
আসামিদের মধ্যে রাসেল ও হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকোরোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আর বাকি আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোর কথা সাংবাদিকদের জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বৃহস্পতিবার পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার ও এসআই একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
