ছাত্রলীগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত

মত ও পথ

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে ছাত্রলীগ একটি আবেগ ও চেতনার নাম। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি  বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলা ভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণঅভ্যুত্থান, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলন। মোদ্দাকথা হলো বাংলাদেশের জন্ম থেকে শুরু করে প্রায় সব গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে আছে।

অবিভক্ত পাকিস্তানের সর্বপ্রথম ছাত্র সংগঠন এটি। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ নামে যাত্রা শুরু এই সংগঠনটির। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য গত এক দশকে ছাত্রলীগ নানা কারণে আলোচিত সমালোচিত ছিল। এ সময়ে টেন্ডারবাজি, মাদক ও অস্ত্রসহ নানা গুরুতর অভিযোগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে আরো একটি গুরুতর অভিযোগ ছিল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ। প্রতিবারই কমিটি গঠনে সিন্ডিকেটের দিকে অভিযোগের তীর ছিল। কিন্তু এবারের ছা্ত্রলীগ কমিটি গঠনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা সিন্ডিকেট ভেঙ্গে নানা মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃত্বে নিয়ে আসেন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে।

universel cardiac hospital

সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজেদের প্রতি এবং ছাত্রলীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব হিসেবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ তো দিতেই পারেননি বরং উল্টো এমন সব কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন যার ফলে সংগঠন ও সরকার দলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।ঠিক এমন মূহুর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে সংগঠনের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে প্রশংসনীয় একটি কাজ করেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি এবং সাধুবাদ জানাই।

আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে সাধারণ মানুষ ভাবে যে, তার ভাগ্য বদল হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজেও সারাক্ষণ এই কথাটি বলেন এবং পরিশ্রমও করেন সে লক্ষ্যেই। আমরা মনে করি- মানুষ আওয়ামীগের উপর আস্থা রাখতে চায়, তাদের আস্থা রাখার জায়গাটি জঞ্জালমুক্ত করে  না দিলে ভয়ংকর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে সেটা। মানুষ নিরাপদে থাকতে চায়। একই সঙ্গে উন্নয়নও চাই। কিন্তু যারা ‘ফেয়ার শেয়ার‘ চেয়ে মানুষকে প্রতিপক্ষ করছে তাদেরকে কেবল বাদ দেওয়া নয়, শাস্তির আওতায় আনতে হবে, সে ছাত্রলীগ হলে ছাত্রলীগ, ভিসি হলে ভিসি, নেতা হলে নেতা, সরকারী কর্মকর্তা হলে সরকারী কর্মকর্তা। একই সঙ্গে আমরা বলতে চাই- ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পরিবর্তন, পদত্যাগের নোটিশ সকলের জন্য সতর্কবার্তা হোক। ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে আসা আল নাহিয়ান খান জয় এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে অভিনন্দন। আমরা আশা করব- তারা ছাত্রলীগের গৌরবের বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী দিনে এগিয়ে যাবে।

জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে