পুঁজিবাজারের উন্নয়নের লক্ষে আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় বৈঠকে বসবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগারগাঁও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষের এ বৈঠকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। বৈঠকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের মতামত নেবেন অর্থমন্ত্রী।
বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) চেয়ারম্যান এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়েছে।
এ ছাড়া সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও আইসিবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বৈঠকে অংশ নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন ইস্যুতে সম্প্রতি শেয়ারবাজারে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বড় ইস্যু হিসেবে দেখা দিয়েছে ব্যাংকের ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয় ও গ্রামীণফোনের বিষয়টি। চলতি মাসে ব্যাংকের এডিআর সমন্বয়ের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হচ্ছে।
এর আগে চাপে পড়ে চার দফা এডিআর সমন্বয়ের সময় বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে সর্বশেষ বাড়ানো হয় চলতি বছরের মার্চে। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক নির্দেশনা জারি করে এডিআর সমন্বয়ের সময়সীমা ছয় মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
তার আগে এডিআর সমন্বয়ের সময় ছিল চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। আগ্রাসী ও মানহীন ঋণ বিতরণ ঠেকাতে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথম দফায় এডিআর কমানোর নির্দেশ দেয়।
সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, জুনের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে বাড়তি ঋণ সমন্বয় করে নির্ধারিত সীমায় আনতে হবে। পরে ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে আরেকটি নির্দেশনা দিয়ে সমন্বয়ের সময় বাড়িয়ে ডিসেম্বর করা হয়। এরপর তৃতীয় দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সমন্বয়ের সময় বেঁধে দেয়া হয়।
এডিআর সমন্বয়ের সময় ঘনিয়ে আসায় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে দরপতন দেখা দেয় দশের শেয়ারবাজারে। ঘটতে থাকে একের পর এক বড় দরপতন। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একধরনের আতঙ্কও দেখা দেয়।
ওই পরিস্থিতিতে মার্চের প্রথম অর্ধেই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এডিআর সমন্বয়ের সময় বাড়ানোর নির্দেশনা আসে। ফলে কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার।
তবে এডিআর সমন্বয়ের সময় ঘনিয়ে আসায় আবারও শেয়ারবাজারে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। টানা তিন সপ্তাহের দরপতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে। সেই সঙ্গে পতন হয়েছে সব মূল্য সূচকের। তিন সপ্তহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ৩০০ পয়েন্টের ওপরে।