কাল ১১টা পর্যন্ত ভিকারুননিসায় নতুন অধ্যক্ষের যোগদান নয়

ডেস্ক রিপোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফওজিয়া রেজওয়ানার নিয়োগ বৈধভাবে হয়েছে কি না- সে সিদ্ধান্ত আগামীকাল মঙ্গলবার জানাবে হাই কোর্ট।

আর ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে ফওজিয়া যেন মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত নতুন দায়িত্বে যোগ দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ হিসেবে ফওজিয়াকে নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা এক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ভিকারুননিসায় বিশেষ কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিধান চ্যালেঞ্জ করে এর আগে একটি রিট আবেদন করেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ফওজিয়ার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার তিনি সম্পূরক আবেদনটি করেন।

ওই আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই আদালতে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

গত বছর বেইলি রোডের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মুখে ভিকারুননিসার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ তিন শিক্ষককে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এরপর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব চালিয়ে আসছিলেন কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম। গত এপ্রিলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হলেও অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তা বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এরপর রোববার ঢাকার সবুজবাগ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনরত ফওজিয়া রেজওয়ানকে ভিকারুননিসার নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কিন্তু ইউনুছ আলী বলছেন, ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিস রেগুলেশনস অনুযায়ী, ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির হাতে। এ বিধান অনুসরণ না করে সরকার মাউশির একজন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে তা ‘আইনসম্মত হয়নি’।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন ছাড়া কিছু করা যাবে না। কিন্তু সরকার আইন ছাড়াই প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগ দিয়েছে। ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিসেস রেগুলেশনসে প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগের বিধান নাই।

ওই নিয়োগের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সেই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে ইউনুছ আলীর আবেদনে। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় ওই নিয়োগ আদেশের ওপর স্থগিতাদেশও চাওয়া হয়েছে।

শিক্ষাসচিব, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ১১ জনকে এ আবেদনে বিবাদী করেছেন ইউনুছ আলী।

সোমবার তিনি শুনানিতে তার যুক্তি তুলে ধরার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইন দেখে তিনি কথা বলতে চান। সেজন্য সময় দরকার।

এ সময় ইউনুছ আলী বলেন, মঙ্গলবার নতুন অধ্যক্ষের যোগদান করার কথা। রাষ্ট্রপক্ষকে সময় দেওয়া হলে তিনি হয়ত নতুন দায়িত্বে যোগ দিয়ে ফেলবেন।

পরে আদালত বলে, মঙ্গলবার বিষয়টি আদেশের জন্য থাকবে। আর নতুন অধ্যক্ষ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত যাতে যোগ দিতে না পারেন, রাষ্ট্রপক্ষ তা নিশ্চিত করবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে