রাজনৈতিক মতাদর্শে দুই জনে বিপরীত মেরুতে অবস্থানের কারণে দীর্ঘদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তবে এবার পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে সেই অবস্থান বদল হলো। ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে দিল্লিতে মমতা বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। ইস্যু—পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা গেছে, এই বৈঠকের জন্য সময় চাওয়া হয়েছিল। গতকাল সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মমতা ব্যানার্জির জন্য সময় বরাদ্দ করা হয়েছে।
সূত্রে খবর, প্রশাসনিক বিষয়ের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া এবং প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হবে। এনআরসি নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন মমতা। আসামে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর শুধু রাজনৈতিক বিরোধিতা নয়, পথে নেমে প্রতিবাদ করেছেন। কলকাতায় মিছিল করে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, একজনের গায়েও হাত দিতে দেবেন না তিনি। বৈঠকে এনআরসির বিষয়টিও উঠবে। থাকছে ভারতের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সংযুক্তিকরণ এবং এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণের বিষয়টিও। অক্টোবর মাসে ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা ব্যানার্জির বৈঠকে আলোচনায় তিস্তার পানিবণ্টনের প্রসঙ্গটিও উঠে আসতে পারে।
- আরও পড়ুন >> এরদোগান-রুহানির রুদ্ধদ্বার বৈঠক
লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি বিরোধী শক্তির অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছিলেন মমতা। নির্বাচনী মঞ্চে পরস্পরের প্রতি ভাষা—বান দেশ জুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল। যদিও দুজনেই বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, রাজনীতি আর উন্নয়নকে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয় বরং দিল্লি-পশ্চিমবঙ্গ সমন্বয় রেখে চলাই উচিত। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিকভাবে প্রায় বিপরীত মেরুর দুই শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠকের দিকে তাই নজর থাকবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
আজ মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। তার পরের দিন মোদি—মমতার বৈঠক। স্বাভাবিকভাবেই বৈঠকে মোদিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবেন মমতা। থাকতে পারে উপহারও।
উল্লেখ্য, শেষবার মোদি-মমতা মুখোমুখি হয়েছিলেন গত বছর মে মাসে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষ্যে। সেবার শান্তিনিকেতনে ‘বাংলাদেশ ভবন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে ছিলেন তিন জন। ঘটনাচক্রে প্রায় ১৬ মাস পর মোদি-মমতা ফের একবার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে।