পেঁয়াজের দাম কমে আসবে : বাণিজ্য সচিব

মত ও পথ প্রতিবেদক

পেঁয়াজ
ফাইল ছবি

 ‘পেঁয়াজের দাম নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই’, উল্লেখ করে শিগগিরই বাজারে এর দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন নতুন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন।

পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে করণীয় ঠিক করতে সরকারি বিভিন্ন দফতর, পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি এ আশ্বাস দেন। আজ মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক হয়।

universel cardiac hospital

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার জন্য তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। তার পক্ষে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন।

বাণিজ্য সচিব বলেন, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দর বৃদ্ধি পায়। ফলে ভারত সরকার পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে। আগে যেখানে ২৫০-৩০০ ডলার আমদানি করা যেত তা ৮৫০ ডলারে এসেছে এবং বাংলাদেশে পেঁয়াজের দরে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাজারদরের ঊর্ধ্বগতি রোধে ন্যায্যমূল্যে ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাসের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পত্র পাঠানো হয়েছে।

এক থেকে দেড় মাসের জন্য এ সমস্যা হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, টিসিবি কার্যকর ভূমিকা পালন শুরু করেছে। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন সুদের হার হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছি।

এ ছাড়া বন্দরে আমদানি পেঁয়াজের খালাস প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা এবং নির্বিঘ্ন পরিবহন নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা আজ-কালের মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য চিঠি দেব। ইতিপূর্বে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা কথা দিয়েছেন মালামাল খালাস থেকে শুরু করে পরিবহন ব্যবস্থায় কোনো সমস্যা হবে না।

আমরা হিসাব করে দেখলাম আমদানি পর্যায়ে যেগুলো পাইপলাইনে আছে এবং বর্তমানে যে মজুত আছে তা সন্তোষজনক। কাজেই আমার মনে হয় পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কারণ নেই বলে সভা থেকে জানতে পেরেছি।

জাফর উদ্দিন বলেন, পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে বেশি গ্যাপ মনে হচ্ছে। এটা যাতে কমে আসে, সেজন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ থেকে শুরু করে আরও কিছু এজেন্সি এগুলো মনিটরিং করে। মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। আশা করি, এ সমস্যা আর থাকবে না।

সচিব বলেন, আজকের সভা শেষে খুব শক্তভাবে বলতে চাই, আমাদের মজুত সন্তোষজনক, যেভাবে দাম বাড়ানো হচ্ছে এ জিনিসগুলোর, আশা করি থাকবে না আজকের মিটিংয়ের পরে। পাইকারি থেকে খুচরায় যে দাম বাড়ছে, আমরা সিদ্ধান্ত দিলাম আজকে মনিটরিং জোরদার করা হচ্ছে। আপনারা একটু ধৈর্য ধারণ করুন। আমাদের একটু সময় দেন। আশা করি, এ সমস্যা থেকে শিগগিরই বের হতে পারব।

ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আলবিরুনী বলেন, পেঁয়াজ সিজনাল এবং পচনশীলের কারণে আমদানি করতে হয়। আমাদের চাহিদা ২৪ লাখ টন। উৎপাদনও প্রায় ২৪ লাখ টন। কিন্তু পচনের কারণে সাড়ে সাত লাখ টন নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আমরা ১০-১১ লাখ টন আমদানি করি।

তিনি বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১২ লাখ টনের এলসি নিষ্পত্তি হয়। আমাদের মজুত সন্তোষজনক। সব মিলে আমদানির পর্যায়ে রয়েছে ৪০ হাজার টন। এটা আসলে আমাদের লিংক পিরিয়ড দেড় মাসে এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ আসবে এবং ভারতে তার এক মাস আগে নতুন পেঁয়াজ নামবে। তখন ভারত ব্যারিয়ার উঠিয়ে দেবে। তখন স্বাভাবিক হয়ে যাবে, এটা নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় আজ ৫৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে জানিয়ে ট্যারিফ কমিশনের এই সদস্য বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, আমরা নিশ্চিত যে, ২৪ ঘণ্টায় দাম কমে আসবে। আজকের বৈঠকের পরে দাম কমে আসবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে