যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস ক্লাবের অবৈধ ক্যাসিনো মালিক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় সাতদিনের রিমান্ডে। অস্ত্র মামলায় চারদিন ও মাদক মামলায় তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আদালতে তুলে অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুই মামলায় সাতদিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে অস্ত্র মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা ও মাদক মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মাদক মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখার আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গুলশান থানা সূত্রে জানা গেছে, খালেদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিং আইনে তিনটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় মামলাগুলো করা হয়।
এর আগে আটক খালেদকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় র্যাব। গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর নিজ বাসা থেকে খালেদ মাহমুদকে আটক করা হয়।
র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বলেন, আটক খালেদকে র্যাব-৩ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়।
- আরও পড়ুন >> ‘এখন রোহিঙ্গারা বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে’
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ক্যাসিনো ও মাদক ব্যবসা নিয়ে আটক খালেদকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে গুলশান থানায় ও মাদক আইনে মতিঝিল থানায় পৃথক দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। র্যাব বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে এ দুটি মামলা করবে বলেও জানান তিনি।
১৮ সেপ্টেম্বর রাতে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে অস্ত্রসহ আটক করে র্যাব। আটকের পর তাকে র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গ্রেফতারের সময় খালেদের বাসা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবা, লকার থেকে ১০০০, ৫০০ ও ৫০ টাকার বেশ কয়েকটি বান্ডিল উদ্ধার করা হয়। সেগুলো গণনার পর ১০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এছাড়া ডলারেরও বান্ডিল পাওয়া যায়। টাকায় তা ৫-৬ লাখ টাকা হবে বলে জানায় র্যাব।
এছাড়া তার কাছ থেকে মোট তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। যার একটি লাইসেন্সবিহীন, অপর দুটি লাইসেন্সের শর্তভঙ্গ করে রাখা হয়েছিল।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে মতিঝিলের ক্যাসিনো পরিচালনার বিষয়টি মতিঝিল থানা পুলিশ, মতিঝিল জোন, পুলিশ সদর দফতর ও ডিএমপি সদর দফতরের কর্মকর্তারা জানতেন বলে দাবি করেন খালেদ। তবে পুলিশের সঙ্গে ক্যাসিনো পরিচালনার জন্য কোনো আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলেননি তিনি।
সূত্র জানায়, খালেদের ক্যাসিনোর বিষয়ে পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সংস্থা এবং রাজনীতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জানতেন। তাদের ‘ম্যানেজ করে’ ক্যাসিনো চালাতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন তিনি।