রোহিঙ্গাদের সু চি ‘বাংলাদেশি’ বলায় বিরক্ত হন ক্যামেরন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ক্যামেরন-সু চি
ক্যামেরন-সু চি। ফাইল ছবি

প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিষয়ে সু চি’র অবস্থান নিয়ে স্মৃতিকথায় বিরক্ত প্রকাশ করেছেন।

কারণ, ২০১৩ সালে ক্যামেরনের সঙ্গে এক বৈঠকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ‘বাংলাদেশি’ বলেছিলেন অং সান সু চি।

২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময়ের নানা ঘটনা নিয়ে ‘ফর দ্য রেকর্ড’ নামে একটি বই লিখেছেন ক্যামেরন। বৃহস্পতিবার বইটি প্রকাশ করা হয়।

আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন নিউজউইকে ক্যামেরনের বই নিয়ে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। যেখানে সু চি’র সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বইতে ক্যামেরনের বক্তব্য উঠে আসে।

১৯৪৮ সালে মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর ২০১২ সালে প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটিতে সফরে গিয়েছিলেন ক্যামেরন। স্মৃতি কথায় সুচির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে প্রশংসা করে ক্যামেরন লিখেছেন, আমি গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি’র সঙ্গে বৈঠক করি। তিনি শিগগিরই প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করবেন। ১৫ বছরের গৃহবন্দিত্ব থেকে সত্যিকার গণতন্ত্রের পথে যাত্রা, তার এই দারুণ গল্প নিয়েই আমরা কথা বলেছি।

এর পরের বছর লন্ডনে ক্যামেরনের সঙ্গে আবার দেখা হয় সু চি’র। এ বার অবশ্য তিনি আগের মতো প্রশংসা করেননি। বরং সুচির উপস্থিতিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় হতাশ ছিলেন ক্যামেরন। এরপর সাক্ষাতে সু চি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ বলায় বিরক্ত হন ক্যামেরন।

তিনি লিখেছেন, কিন্তু ২০১৩ সালের অক্টোবরে সু চি যখন লন্ডন সফরে আসেন, সবার চোখ তখন রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর। বৌদ্ধ রাখাইনরা তাদের নিজ বাসস্থান থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছিল। ধর্ষণ, হত্যা, জাতিগত নিধনসহ অনেক কিছুই আমরা শুনেত পাচ্ছিলাম। আমি তাকে বললাম, বিশ্ব সব দেখছে। তিনি উত্তর দিলেন, তারা আসলে বার্মিজ নয়। তারা বাংলাদেশি।

এতে বিরক্ত প্রকাশ করে ক্যামেরন লেখেন, এরপর ২০১৫ সালে তিনি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নেতা হলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চলতেই থাকল।

২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ পোস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কথিত হামলায় নয় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর ওই রাজ্যে বিশেষ করে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে সেনা অভিযান শুরু হয়।

হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নানা নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময়ে সেনা কর্মকর্তাদের অত্যাচারে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা ১১ লাখের চেয়ে বেশি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে