ছাত্রলীগের হামলা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত : মির্জা ফখরুল

মত ও পথ প্রতিবেদক

ছাত্রলীগের হামলা রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত
ছবি : সংগৃহিত

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ‘রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত’ হিসেবে দেখছেন।

আজ সোমবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নেতাকর্মীদের দেখার পর বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি ওই ঘটনার নিন্দা জানান।

universel cardiac hospital

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর ও টিএসসিতে সোমবার দুপুরে (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলায় তিন সাংবাদিক ও ছাত্রদলের ২৭ জন আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পাসের হাকিম চত্বরে একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে আসেন ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল। এ সময় সাত-আটজন নেতাকর্মী নিয়ে সনজিত ছাত্রদল নেতাকর্মীদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন।

এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসিতে চলে এলে সনজিতের অনুসারী ৫০ জন নেতাকর্মী রড, লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রদল নেতাদের মারধর করেন।

হামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, অত্যন্ত সফল সম্মেলন ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতিতে ছাত্রদল নতুন উদ্যোগ নিয়ে নতুন একটা স্বপ্ন সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিল। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিশেষ করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আজ ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিসহ নেতাকর্মীদের ওপর যে আক্রমণ চালিয়েছে- এটা শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, এটা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অশনিসংকেত মনে করছি।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ছাত্রদলের ওপর এ হামলা গণতন্ত্রের ওপর হামলা। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগকর্মীদের হামলায় ২০-৩০ জন আহত হন। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বর, দোয়েল চত্বর ও টিএসসিতে দফায় দফায় ওই হামলার সময় দায়িত্ব পালনরত তিন সাংবাদিকও আক্রান্ত হন।

বিকেল সাড়ে ৪টায় বিএনপি মহাসচিব কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে যান। তিনি তাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন। তিনি তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবরও নেন।

মির্জা ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় সন্ত্রাসী দল, ছাত্রলীগ তো বটেই। ছাত্র রাজনীতির যে একটা নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে যাচ্ছিল ছাত্রদল, সেই অধ্যায়কে সমূলে বিনষ্ট করার জন্য এটা একটা পাঁয়তারা। কারণ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কয়েক দিন ধরে আমরা যা দেখছি যে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি- সব রকমের অন্যায়-অপকর্ম তারা করছে। সন্ত্রাস তারা সব সময় করে এসেছে। সেই সন্ত্রাসের একটা নজির আজ দেশবাসী দেখতে পেল।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ছাত্রদল যেভাবে জেগে উঠেছে, এ ছাত্রদল নিশ্চয়ই নিঃসন্দেহে তারা অত্যন্ত সুসংগঠিত হতে পারবে এবং দেশের ছাত্র রাজনীতিতে বিশেষ করে গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ক্ষেত্রে তারা তাদের যে অবদান, সেই অবদান অবশ্যই রাখতে সক্ষম হবে।

সন্ত্রাসীরা কখনও জয়ী হতে পারে না। তারা অবশ্যই এ ছাত্রদলের নেতৃত্বেই পরাজিত হবে- যোগ করেন তিনি।

সাবেক ছাত্রনেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ডা. রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসও আহতদের দেখতে যান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে