‘ভ্যাকসিন হিরো’ পদকে ভূষিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মত ও পথ ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
‘ভ্যাকসিন হিরো’ পদক গ্রহণ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক সফলতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পদক দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। এই পুরস্কার গ্রহণের পর গণমাধ্যমে জানানো প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পদকটি দেশবাসীর প্রতি উৎসর্গ করেছেন।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদরদফতরে ‘ইমিউনাইজেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের স্বীকৃতি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

universel cardiac hospital

জিএভিআই বোর্ড সভাপতি ড. এনগোজি অকোনজো ইবিলা এবং সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেথ ফ্রাংকলিন বার্ক্লে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদক তুলে দেন।

ড. এনগোজি অকোনজো তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশংসা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাকসিনেশনের জন্য বাংলাদেশের কঠোর পরিশ্রম আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সুস্থ ও নতুন প্রজন্ম দরকার।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিয়ে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অধীনে ইমিউনাইজেশনে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ২০৩০ সালের অনেক আগেই বাংলাদেশে সকলের জন্য ভ্যাকসিনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। ইমিউনাইজেশনকে স্বাস্থ্যখাতে সরকারিভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্যগাঁথা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রে গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এবং অন্যান্য অংশীদারদের তাদের অব্যাহত সমর্থন ও অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এসময় তিনি সকল পর্যায়ে অন্যান্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে ইমিউনাইজেশনকে সমন্বিত করতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দেন।

বাংলাদেশের কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাখাইন থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে বিরাট ঝুঁকি তৈরি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, রুটিন ভ্যাকসিনেশন ও ইমিউনাইজেশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডিপথেরিয়া, কলেরা এবং এ ধরনের রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই লক্ষ্যে সফলভাবে ভ্যাকসিনেশন পরিচালনা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিএভিআইর সর্বশেষ জরুরি এবং শরণার্থী নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৭ সালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে। প্রধানমন্ত্রী পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণে জনগণের প্রতি তার সরকার সর্বদাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ প্রসঙ্গে তিনি, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, তার সরকার সকলের মৌলিক স্বাস্থ্য ও পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিতকরণে সক্ষম হবে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য আটদিনের সফরে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ ৭৪তম বার্ষিক অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন।

রোববার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। আবুধাবিতে একদিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি রোববার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে আবুধাবি থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করে।

এর আগে শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আবুধাবির উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে