তিন জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৩, গুলিবিদ্ধ ১

সারাদেশ ডেস্ক

বন্দুকযুদ্ধ
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পুলিশ, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত এবং একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে আজ শুক্রবার ভোরের মধ্যে ময়মনসিংহের তারাকান্দা, চট্টগ্রামের খুলশী এবং কক্সবাজারের টেকনাফে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা এলাকায়  গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন আব্দুল করিম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় ‘বন্দুকযুদ্ধের’ এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল করিম তারাকান্দা নলকাকরা গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে। পুলিশ বলছে তিনি মাদকবিক্রেতা। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, এক রাউন্ড গুলি ও ২০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ডিবির পক্ষ থেকে।

জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দের ভাষ্যমতে, আন্তঃজেলা সংঘবদ্ধ মাদকবিক্রেতারা ওই এলাকায় অবস্থান করছে- এমন গোপন খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছায়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।

একপর্যায়ে মাদকবিক্রেতারা পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের ছোড়া গুলিতে আব্দুর করিম আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত করিমের বিরুদ্ধে থানায় ১৩টি মাদকের মামলাসহ ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে বলে দাবি করেন ডিবির ওই কর্মকর্তা। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেন নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. রাজু (২৬) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২ টার দিকে নগরীর খুলশী থানার টাইগারপাস বালুর মাঠ এলাকায় এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।

রাজু জেলার খুলশী থানার মতিঝর্ণা এলাকার মৃত জালাল মাঝির ছেলে। পুলিশের দাবি, তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী এবং ছয় মামলার আসামি। তাকে রাজু চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী।

ওসি প্রণব বলেন, গভীর রাতে একটি ছিনতাইকারী দলকে আটক করতে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন রাজু। গোলাগুলিতে খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন এবং কনস্টেবল গিয়াস আহত হয়েছেন বলে ওসি জানান।

ওসির দাবি, পুলিশ ছিনতাইকারীদের মোকাবেলায় চার রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, দুই রাউন্ড কার্তুজ এবং দুইটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি পুলিশের।

ওসি জানান, আহত রাজুর বিরুদ্ধে চারটি মাদকের, একটি ডাকাতি এবং একটি হত্যা মামলা রয়েছে। একই ঘটনায় একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অপরদিকে, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন দুই ব্যক্তি। আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার হ্নীলা জালিয়াপাড়া সংলগ্ন নাফনদীতে এ ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। বিজিবির দাবি, নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তাদের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে বিজিবির পক্ষ থেকে।

টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফয়সল হাসান খানের ভাষ্যমতে, টেকনাফের হ্নীলা বিওপির টহল দল জালিয়াপাড়া এলাকায় নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় একটি নৌকায় করে নাফ নদী পাড় হয়ে চারজন লোক জালিয়াপাড়ার দিকে যাচ্ছে। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে নৌকাটিকে তীরে আসার জন্য সংকেত দেওয়া হয়। সংকেত পেয়ে নৌকা থেকে চারজনের মধ্যে দুইজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যরা ধাওয়া করে।

একপর্যায়ে বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে মাদক পাচারকারীরা। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে  ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদেরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ৭০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি দেশি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।

বিজিবির ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে