শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গলাকাটা টিউশন ফি আদায় বন্ধে নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টিউশন ফি নীতিমালা-২০১৯ তৈরির মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইচ্ছামতো অর্থ আদায় বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। তবে প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি ও অন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হবে।
সূত্র মতে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের থেকে গলাকাটা ফি আদায় করা হয়। একেক প্রতিষ্ঠানে একেক ধরনের ফি আদায় করা হয়, যা পরিশোধ করতে অভিভাবকদের নাভিশ্বাস দেখা দেয়।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো বিধান না থাকায় সরকারিভাবে বারবার সতর্ক কারার পরও তা বন্ধ হচ্ছে না। টিউশন ফি নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, নীতিমালা প্রণয়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদকে প্রধান করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (অডিট ও আইন) আহমদ শামীম আল রাজী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আনোয়ারুল হক।
কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সারাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে টিউশন ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ লক্ষ্যে নীতিমালা করতে কাজ শুরু করেছি। এ সংক্রান্ত কাজের বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অভিভাবকরা দীর্ঘদিন থেকেই মন্ত্রণালয়ের কাছে যৌক্তিক টিউশন ফি নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও দায়িত্ব নিয়েই প্রথম সমন্বয় সভায় গলাকাটা ফি আদায় বন্ধে গুরুত্ব দেন। সর্বশেষ চলতি বছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনেও এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন জেলা প্রশাসকরা।
এ বিষয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের আহ্বায়ক জিয়াউল কবির দুলু গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারিভাবে টিউশন ফি নির্ধারণ না থাকায় বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছেমতো অর্থ আদায় করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো কে কার চেয়ে বেশি ফি নেবে সে প্রতিযোগিতা চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে বছরে দুই থেকে তিনবারও ফি বৃদ্ধি করে।
তিনি বলেন, অনেক আগেই সরকারিভাবে টিউশন ফি নির্ধারণ করা দরকার ছিল। তবে দেরি হলেও এ সংক্রান্ত নীতিমালার প্রণয়ন হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর ইচ্ছেমতো ফি বাড়াতে পারবে না। তবে এ বিষয়ে সরকারের মনিটরিংয়ের কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশনা না থাকায় কিছু প্রতিষ্ঠান বছরে কয়েকবার শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধি করছে। এতে চরম বিপদে পড়েন অভিভাবকরা। সরকার এর আগে ভর্তির নীতিমালা জারি করায় ভর্তি ফি নিয়ে বাণিজ্য দূর হয়েছে। এবার টিউশন ফি নির্ধারণ হলে শিক্ষাবাণিজ্য বন্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।