বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিমানের ভুয়া টিকিট বুকিংয়ের সঙ্গে যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি।
আজ রোববার সংসদ ভবনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কমিটির সভা শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কমিটি বিমানের ভুয়া টিকিট বুকিংয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে তার তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোর নামের তালিকা প্রদানের সুপারিশ করেছে।
বৈঠকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চাহিদার গুরুত্ব দিয়ে পর্যটনকে আরো আকর্ষণীয় এবং যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সুপারিশ করেছে।
মুজিববর্ষে ১৯ কোটি টাকার বেশি খরচের পরিকল্পনা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯ কোটি টাকারও বেশি খরচের পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন (বাপক)। এই ১৯ কোটি টাকা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে চাওয়া হবে। কর্পোরেশন কর্তৃক গৃহিত ১৪টি পরিকল্পনার মধ্যে ৫টির জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সম্ভাব্য ব্যয়ের টাকা চাইবে পর্যটন কর্পোরেশন। অন্যগুলো নিজ অর্থায়নে খরচ করা হবে। নিজ অর্থায়নে তারা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন (১৭ মার্চ) ১০০ পাউন্ডের কেক তৈরি করবে। এছাড়া বিশাল একটা অংক ধরা হয়েছে কক্সবাজার কার্নিভালের জন্য।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সরকারি এই সংস্থাটি জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ কেক তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করবে।
সংসদীয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পর্যটন কর্পোরেশন বৈঠকে মুজিববর্ষে তাদের কর্মপরিল্পনা তুলে ধরেছে।
‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে মন্ত্রণালয় থেকে যেসব খাতে টাকা চাওয়া হবে তা হলো ২০২০ সালের ১৭ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যটন কর্পোরেশনের ভ্রমণ বিভাগ থেকে ঐতিহাসিক মুজিবনগর টুঙ্গিপাড়ায় প্যাকেজ ট্যুর পরিচালনা করা হবে। এছাড়াও দুইজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল তারা বঙ্গবন্ধুর গল্প বলবেন। এজন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হবে।
২২ এপ্রিল ঢাকা-চাঁদপুর একটি ইলিশ প্যাকেজ এর আয়োজন করা হবে। বিআইডব্লিউটিসি থেকে জাহাজ/প্যাডেল স্টিমার ভাড়া করে ট্যুর পরিচালনা করা হবে। সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা।
২৫ থেকে ২৬ জুলাই কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসকের সহায়তায় সুগন্ধা অথবা লাবণী পয়েন্ট কক্সবাজারে সার্ফিং উৎসবের আয়োজন করা হবে। এজন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হবে।
২০ অক্টোবর কুষ্টিয়ায় লালন উৎসব আয়োজন করা হবে। এ জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হবে এবং৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার বিচে কার্নিভালের আয়োজন করা হবে। সুগন্ধা/লাবণী পয়েন্টে এই কার্নিভাল আয়োজন করা হবে। এখানে বিদেশি-বিদেশি পর্যটকদের বিশেষ সুবিধা প্রদান করে স্পেশাল প্যাকেজ ট্যুর অফার করা হবে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
বাকি কর্মসূচিগুলো সংস্থার নিজস্ব বাজেট থেকে গ্রহণ করা হবে। এতে সম্ভাব্য কত ব্যয় হতে পারে তা উল্লেখ করা হয়নি প্রতিবেদনটিতে। এসবের মধ্যে রয়েছে বাংলা চ্যানেল সুইমিং প্রতিযোগিতার আয়োজন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন এবং বাংলাদেশের পর্যটন শীর্ষক সেমিনার এবং শিকল ভাঙার গান, তিন পার্বত্য জেলায় বৈসাবি উৎসব, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সুন্দরবন/প্রত্নতাত্ত্বিক/সিলেট আলাদা বিশেষ প্যাকেজ ট্যুর ইত্যাদি।
হালাল ট্যুরিজমকে উৎসাহ প্রদানে পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল-মোটেলে হালাল খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কাজী ফিরোজ রশীদ, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান এবং সৈয়দা রুবিনা আক্তার অংশগ্রহণ করেন।